আসামি শনাক্ত কিংবা ধরতে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। তবে উন্নত বিশ্বে রাসায়নিক পরীক্ষা ডিএনএ (ডি-অক্সিরাইবোজ নিউক্লিক অ্যাসিড) ব্যবহার করে আসামি শনাক্ত পুরোনো হলেও বাংলাদেশে অনেকটাই নতুন। সম্প্রতি ডিএনএ প্রোফাইল ব্যবহার করে একটি হত্যা মামলার আসামিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শেরপুরের নকলা থানার একটি হত্যা মামলায় হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরি থেকে রক্তের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে আসামি শনাক্ত করেছে সিআইডির ডিএনএ ল্যাবরেটরি ইউনিট।

সিআইডির ফরেনসিক শাখার ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম জানান, গত ১১ ফেব্রুয়ারি নকলা থানার রুনীগাঁও গ্রামের সোহেল মিয়ার ছাগল আহসানুল কবীরের জমিতে ঢুকে ধানের চারা নষ্ট করে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়লে তাদের প্রতিবেশী আ. বারেক মীমাংসার চেষ্টা করে। বারেক তাদের ঝগড়া বিবাদ মীমাংসা চেষ্টা করার ফলে আহসানুল কবির ও তার পরিবারের সঙ্গে মনোমালিন্য হয় ও তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। সিআইডির ফরেনসিক শাখার ডিআইজি জানান, পরদিন বারেক জমিতে কাজ করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হলে পথে আহসানুল কবীর এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যরা তার পথ রোধ করে ধারাল ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করে। এ সময় আ. বারেকের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বারেকের ছেলে শামীম বাদী হয়ে আসামি আহসানুল কবীর এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নকলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকালে আহসানুল কবীরের কাছ থেকে রক্তমাখা ছুরি জব্দ করে ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি। পরে সিআইডিতে আলামত হিসেবে রক্তের নমুনা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠায়।

সিআইডির ডিএনএ ল্যাবে ওই ছুরি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফল থেকে দেখা যায় যে, ছুরিতে লেগে থাকা রক্ত এবং নিহত আবদুল বারেকের শরীর থেকে সংগৃহীত রক্তের ডিএনএ প্রোফাইল সম্পূর্ণ এক। তাই ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল থেকে প্রমাণিত হয় যে, আসামি আহসানুল কবীরের কাছ থেকে জব্দ করা ছুরি দিয়ে বারেককে খুন করা হয়।

সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের দাবি, ডিএনএ ফলাফলের মাধ্যমে প্রকৃত আসামি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ফলে ন্যায় বিচার নিশ্চিতে আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে ডিএনএ প্রতিবেদন সহায়তা করবে বলে জানান ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম।

"