কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

ক্ষোভে আত্মহত্যার হুমকি কুড়িগ্রামের এমপির

দলে বঞ্চনার শিকার হয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন উলিপুরের সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন তালুকদার। বিভিন্ন জাতীয় দিবস, সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ না জানানোয় তিনি এ হুমকি দেন। তিনি দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া তার বেঁচে থাকা এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার রাতে তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব আক্ষেপের কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি একজন সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। এছাড়াও আমি এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং মুজিবনগর সরকারের পলিটিক্যাল সুপারভাইজার ছিলাম। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও আমাকেসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত অবমূল্যয়ন করা হচ্ছে। কিছু আওয়ামী লীগ নেতার কারণে স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনকে বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতার বিপক্ষের লোকজনকে সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।’

বর্ষীয়ান এ নেতা আরো বলেন, ২৭ বছর উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করেছি। সেই দুঃসময়ের নেতাদেরও আমার মতো কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে। ১৯৯১ সালে রংপুর অঞ্চলের একমাত্র নৌকার প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে একটি সুযোগসন্ধানী চক্র বসন্তের কোকিল হয়ে দলটাকে গ্রাস করে নিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসাচ্ছেন।

১৯৬৭ সালে আমরা কয়েকজন ছাত্র মিলে ছোট আকারে উলিপুরে প্রথম শহীদ মিনার স্থাপন করি। এখন সে ইতিহাসও বিকৃত করা হচ্ছে। এটা জাতির জন্য লজ্জার।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এমপি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোলায়মান সরদার বাদশা চিঠি না পাওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে ইউএনও জবাবে বলেন, ওপরের নির্দেশে চিঠি দেওয়া হয় না।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতি শিউলি, সিনিয়র সহ-সভাপতি সোলায়মান সরদার বাদশা প্রমুখ।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কাদেরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদেরই শুধু চিঠি দেওয়া হয়। তবে এসব জাতীয় অনুষ্ঠানে সবার আসা উচিত।

এ ব্যাপরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, সাবেক এমপি নিজেই আওয়ামী লীগ বিরোধী, বার বার উনার ছেলেকে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে এখানে নৌকার ভিত নড়বড়ে করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close