নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

ক্যাসিনো-কাণ্ডসহ অনিয়ম ও দুর্নীতি

কাউন্সিলর রতনকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

ক্যাসিনো-কাণ্ডসহ বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং সরকারি প্রকল্পে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অবৈধভাবে কাজ ভাগিয়ে নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বাধীন টিম গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত কাউন্সিলর রতনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ক্যাসিনো-কাণ্ডে বিতর্কিত যুবলীগ নেতা (বর্তমানে বহিষ্কৃত) ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কের মাধ্যমে কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগে রয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে তলব করে নোটিসও পাঠায় দুদক।

দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকারের স্বাক্ষরিত তলবী নোটিসে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়, ‘ঠিকাদার জি কে শামীমসহ অন্যান্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের শত শত কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্যাসিনো ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকা অবৈধ প্রক্রিয়ায় অর্জন করে বিদেশে পাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার বক্তব্য রেকর্ড করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।

দুদক সূত্র জানায়, ডিএসসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রতনের বিরুদ্ধে শূন্য থেকে শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ পেয়েছে দুদক। দুদকের কাছে অভিযোগে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ভাগিয়ে নেওয়ার, কাজে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন কাউন্সিলর রতন। যুবলীগের বিতর্কিত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে কাউন্সিলর রতনের সঙ্গে সখ্যতা ছিল। তাদের সঙ্গে সখ্যতার মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ভাগিয়ে নিয়েছেন এবং এসব প্রকল্পের কাজে ঘুষ দিয়ে ঠিকমতো কাজ না করেই বিল উঠিয়ে নিয়েছেন। ক্ষমতার মাধ্যমে অবৈধভাবে নামে বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন কাউন্সিলর রতন। এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তার সম্পদের মালিক হওয়ার বৈধ উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাকে দুদকে তলব করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, ঢাকায় একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিক কাউন্সিলর রতন। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় তার নামে বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য রয়েছে দুদকের কাছে। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের একটি অংশ দেশের বাইরেও পাচারের অভিযোগ রতনের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে দুদকের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান চলছে। অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা যারা নিয়ন্ত্রণ করতেন তাদের মধ্যে কাউন্সিলর রতনও একজন ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। এখন পর্যন্ত ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০টি মামলা করেছে দুদক। ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রায় ২০০ জনের তালিকা ধরে দুদক অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে অনুসন্ধানে টিমের অপর সদস্যরা হলেন উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. সালাহউদ্দিন, গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক মামনুর রশিদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান এবং নিয়ামুল আহসান গাজী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close