আদালত প্রতিবেদক

  ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

সাময়িক বরখাস্তের ধারা কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

হাইকোর্ট সরকারি চাকরিজীবীদের সাময়িক বরখাস্ত করা-সংক্রান্ত ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮’-এর ৩৯(১) ধারা কেন অবৈধ, সংবিধান পরিপন্থি ও বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, রংপুর কর অঞ্চলের কর কমিশনার এবং একই জোনের সহকারী কমিশনারসহ (প্রশাসন) সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুলে জারি করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও ব্যারিস্টার রাজু মিয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, সাময়িক বরখাস্তের আগে অভিযুক্তকে নোটিস দেওয়ার বিধান নেই। তবে আইনে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে ছুটিতে পাঠানোর সুযোগ আছে। কিন্তু রিট আবেদনকারীকে ছুটিতে না পাঠিয়ে দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত করে রেখেছে। আইনজীবী আরো বলেন, একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তাকে সাময়িক বরখাস্তের আগে কারণ দর্শাতে নোটিস দেওয়া উচিত। কারণ দর্শানোর নোটিস দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। কিন্তু সেই সুযোগ না দেওয়া সংবিধানের ৭, ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।

সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর ৩৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের প্রস্তাব বা বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করা হলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি, অভিযুক্ত কর্মচারীকে তার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার আবশ্যকতা, তৎকর্তৃক তদন্তকার্যে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা ইত্যাদি বিবেচনা করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অধিকতর সমীচীন মনে করলে, এরূপ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করার পরিবর্তে, লিখিত আদেশ দিয়ে তার ছুটি প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, ওই আদেশে উল্লিখিত তারিখ থেকে ছুটিতে গমনের নির্দেশ দিতে পারবে।’

এর আগে গত ১৫ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচ্চমান সহকারী (কুড়িগ্রাম সার্কেল) রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পঞ্চগড়ে থাকাকালে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় তাকে বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে ওই বরখাস্তের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রফিকুল ইসলাম হাইকোর্টে রিট করেন। রিট আবেদনে সাময়িক বরখাস্তের বিধান-সংক্রান্ত সরকারি চাকরি আইন ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়। সে রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close