নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ নভেম্বর, ২০১৯

গডফাদারদের ছাড় নেই

ইকবাল মাহমুদ

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, গডফাদারদের কোনো ছাড় নেই। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে অনুসন্ধান হয়। প্রমাণ না মিললে সেই অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয় বা পরিসমাপ্তি হয়। কিন্তু নথিভুক্ত করার মানে দায়মুক্তি হতে পারে না। নতুন করে অভিযোগ উঠলে আবার অনুসন্ধান হবে, সেটাই স্বাভাবিক। আর অভিযোগের প্রমাণ মিললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুদক সেভাবেই কাজ করে।

আজ ২১ নভেম্বর দুদকের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২০০৪ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু করে সংস্থাটি। এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে নিজ কার্যালয়ে কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতিবিরোধী যেকোনো অভিযানকেই স্বাগত জানায় দুদক। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক তার নিজস্ব পন্থাতেই কাজ করছে। যারাই দুর্নীতি করবে, তাদেরই জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। অনিয়মকে যারা নিয়ম বানাতে চায়, তাদের ছাড় নেই বলে হুশিয়ারি দেন তিনি। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই দুর্নীতিবাজদের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৫৯ জনের তালিকা হয়েছে। এই তালিকা আরো দীর্ঘ হবে, হচ্ছে। তবে তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের সবাই দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত হবে কিনা, তা এখনই বলা যাবে না। অনুসন্ধান, তদন্ত শেষেই শুধু এ বিষয়ে বলা সম্ভব।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ৪ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে, সংখ্যাটা কম নয়। আর ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ঘটনাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাদের বিষয়ে জানতে চাই। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যানসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে তথ্য চেয়েছি। তথ্য পাওয়ার পর এ নিয়ে পর্যালোচনা হবে। যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমাদের তৈরি করা তালিকাও মিলিয়ে দেখা হবে। সব কাজ দুদক সমন্বিতভাবেই করতে চায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ব্যক্তির রাজনৈতিক, সামাজিক বা পেশাগত পরিচয় দুদকের কাছে বিবেচ্য বিষয় না। কেউ যদি সংবিধান লঙ্ঘন করে কালো টাকা বা অবৈধ সম্পদ অর্জন বা পেশিশক্তি ব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে দাবি করে ইকবাল মাহমুদ আরো বলেন, সফলতা যেমন আছে, তেমনি ব্যর্থতাও আছে। সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তো কাক্সিক্ষত মাত্রায় সফলতা আসেনি। এরপরও প্রাপ্তি একেবারে কম নয় বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে উদাহরণ টেনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের মামলার কারণে সাড়ে ৩ বছরের খেলাপি ঋণের ১৫ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে। এ রকম আরো অনেক ঘটনা আছে উল্লেখ করার মতো। দুর্নীতিবাজরা পার পায়নি। দুদকের কাজের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলেই তাকে নোটিস পাঠায় না দুদক, খতিয়ে দেখে। অনেক অভিযোগ ভিত্তিহীনও প্রমাণ হয়। আমরা যথেষ্ট খোঁজ নিয়ে কাজ করছি। আমাদের কর্মকর্তারা প্রয়োজনে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার কাছেও যাচ্ছেন। সবকিছু ত্রুটিমুক্তভাবে করার চেষ্টা হচ্ছে।

দুর্নীতিবাজদের খোঁজ পেতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মন্তব্য করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত প্রতিবেদন আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close