নিজস্ব প্রতিবেদক ও বগুড়া প্রতিনিধি

  ১৬ নভেম্বর, ২০১৯

ঢাকা ও বগুড়ায় চুরি হওয়া শিশু উদ্ধার : দুই হোতা আটক

রাজধানীর মিরপুরে নবজাতক চুরি করে নিঃসন্তান গৃহবধূর কাছে মাত্র ১ হাজার টাকায় বিক্রি করে এক নারী। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চুরি হওয়া নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে র‌্যাব। অপরদিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই দুই নবজাতককে চুরির অভিযোগে দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরের শাহআলী মাজারে অভিযান চালিয়ে শিশু চোর রুমা আক্তারকে (২০) গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪ এর একটি টিম। র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, বৃহস্পতিবার এক মা অভিযোগ করেন যে, তার সাত মাস বয়সি শিশুটি চুরি হয়েছে। অভিযোগের পর তদন্তের একপর্যায়ে শিশু চোরের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে শাহ আলীর মাজারে অভিযান চালিয়ে রুমা আক্তার (২০) নামে শিশু চোরকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে মানিকগঞ্জের শিবালয় এলাকার টেপরা গ্রাম থেকে শিশু সাদিয়াকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার রুমা আক্তার জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু চুরি করে তা বিক্রি করে আসছিলেন তিনি। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতককে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার পর পুলিশ উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে শিশু চুরির সঙ্গে জড়িত রেশমা খাতুন (৩৫) নামে এক নারীকে আটক করা হয়েছে।

আটক রেশমা শাজাহানপুর উপজলোর রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত সাত্তার মন্ডলের মেয়ে। বগুড়া শহরের লতিফপুর কলোনি এলাকার ফারুক হোসেনের বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।

রাতেই শিশুটিকে তার বাবা সৌরভ মিয়ার কাছে হস্তান্তর করেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা। এ সময় শজিমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এস এম এম সালেহ ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ সুপার নবজাতক ও প্রসূতিকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর চিকিৎসা ও নবজাতকের উন্নত খাবারের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, গত বুধবার হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনা জানার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। বৃহস্পতিবার রাতে খবর পাওয়া যায় নবজাতকটি রামচন্দ্রপুর গ্রামে রেশমা খাতুনের কাছে আছে। পুলিশ সেখানে অভিযান চালালে রেশমা খাতুন নবজাতককে নিয়ে শহরের লতিফপুর এলাকায় ফারুক হোসনের বাড়িতে অবস্থান নেন। সেখান থেকে নবজাতককে উদ্ধার করা হয় এবং রেশমাকে আটক করা হয়।

রেশমা জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি রামচন্দ্রপুর গ্রামে বসবাস করছিলেন। তার নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। পুলিশ জানায়, অন্য কোনো নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশে তিনি হাসপাতাল থেকে কৌশলে ওই নবজাতককে চুরি করেছিলেন। তবে হাসপাতালের সিকিউরিটি থাকার পরও কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বগুড়ার কাহালু উপজেলার নলঘরিয়া গ্রামের সৌরভ মিয়ার স্ত্রী নাহিদা আক্তার শজিমেক হাসপাতালে গত বুধবার এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর ওয়ার্ডে নেওয়ার সময় নবজাতকটি চুরি হয়ে যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close