কলকাতা প্রতিনিধি

  ০১ নভেম্বর, ২০১৯

ভারতে হোয়াটসঅ্যাপে আড়িপাতার চেষ্টা

ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ইউজারদের ওপর আড়িপাতার চেষ্টা হয়েছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০টি দেশের প্রায় ১৪০০ ইউজারের অ্যাকাউন্টে এমন, স্পাইওয়্যার ঢোকানোর চেষ্টা করেছিল ইসরাইলের একটি সংস্থা। বিশেষ করে টার্গেট ছিল ভারতীয় সাংবাদিক-কূটনীতিক পদস্থ সরকারি কর্তা ও মানবাধিকার সংগঠনের পদাধিকারীরা। বিষয়টি নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে ভারত। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইটারে লিখেছেন, হোয়াটসঅ্যাপে ভারতীয় নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। হোয়াটসঅ্যাপের কাছে এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, কি ধরনের হ্যাক হয়েছিল এবং তা সুরক্ষার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই প্রযুক্তি বা সফটওয়্যারের সাহায্যে ইউজারের প্রায় সব ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা যায়। তবে তার আগেই হোয়াটসঅ্যাপের সুরক্ষা প্রযুক্তি সেটা ধরে ফেলে বলে দাবি করা হয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত ওই সংস্থার চেষ্টা সফল হয়নি।

ইসরায়েলের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ওই সংস্থা এনএসও-র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মার্ক জাকারবার্গের সংস্থা। পাশাপাশি এই সপ্তাহেই যাদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার কথাও বলা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের তরফে। তবে ইসরায়েলের ওই সংস্থার দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যা। তারাও এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

হোয়াটসঅ্যাপের প্রযুক্তি ছিল এন্ড টু অ্যান্ড এনক্রিপ্টেড। অর্থাৎ শুধুমাত্র যাদের মধ্যে ভয়েস বা ভিডিও কল কিংবা মেসেজ চালাচালি হচ্ছে, তারা ছাড়া থার্ড পার্টির কেউ জানতে পারবে না। কেউ সেটা অ্যাকসেস করতে অর্থাৎ দেখতে পারবে না। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষও নয়। কিন্তু অত্যন্ত সুরক্ষিত সেই প্রযুক্তিও কি এবার প্রশ্নের মুখে? অন্য দিকে যাদের অ্যাকাউন্টে এই প্রযুক্তি ঢুকিয়ে আড়িপাতার চেষ্টা হয়েছিল তারা এত দিন পর্যন্ত কিছু জানতে পারেননি। হোয়াটসঅ্যাপের তরফে যোগাযোগের পর জেনে কিছুটা আতঙ্কিত। কারণ এরই মধ্যেই ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে গিয়েছে কি না সে বিষয়ে তারা নিশ্চিন্ত নন। যদিও হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে তাদের অ্যাকাউন্ট আগের মতোই সুরক্ষিত।

কীভাবে আড়িপাতার চেষ্টা হয়েছিল? স্পাইওয়্যার আসলে এক ধরনের সফটওয়্যার বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অজান্তেই তার মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে আক্রান্তের পাসওয়ার্ড, কন্ট্যাক্ট লিস্ট বা ফোন নম্বরের তালিকা, ক্যামেরা, ছবিসহ প্রায় যাবতীয় তথ্যের অ্যাকসেস পেয়ে যায় আড়িপাতা ব্যক্তি বা সংস্থা। হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে সেই স্পাইওয়্যারের নাম ছিল পেগাসাস। এই পেগাসাস ঢোকানোর চেষ্টা হয়েছিল ভিডিও কলের সময়। কল করার সঙ্গে সঙ্গেই যাকে ভিডিও কল করা হচ্ছিল তার মোবাইলে একটি বাগ বা ম্যালওয়্যার, যা আসলে কিছু কম্পিউটার কোডের সমন্বয় সক্রিয় হয়ে করার চেষ্টা হয়েছিল। সেটা সফল হলে মোবাইলে ইউজারের অজান্তেই ইনস্টল করে দেওয়া যেত। তার পরেই পাওয়া যেত ইউজারের প্রায় সব ব্যক্তিগত তথ্য। এমনকি, রিসিভার কলের উত্তর দিতে না পারলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কেটে দিলেও তার থেকে মুক্তি পেতেন না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close