নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ অক্টোবর, ২০১৯

‘আকামা’ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাচ্ছে সৌদি

সৌদি সরকারের ধরপাকড়ের কবলে পড়ে এক দিনেই দেশে ফেরত এসেছেন ২০০ বাংলাদেশি। ফেরত আসার আগে তারা সৌদি সরকারের ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে অপেক্ষমাণ ছিলেন। দেশে ফিরে বিমানবন্দরে এদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ‘আকামা’ (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) থাকা সত্ত্বেও ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের। এ বিষয়ে নিয়োগকর্তাদের সহযোগিতা পাননি তারা। বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের একজন কর্মকর্তা তাদের ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত শুক্রবার রাতে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০৪ ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।

ফিরে আসা কর্মীদের অভিযোগ, সৌদি আরবে কিছুদিন ধরে ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। সেই অভিযানে বাদ যাচ্ছেন না বৈধ আকামাধারীরাও। ফেরত আসাদের অভিযোগ, কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে সৌদি পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সে সময় নিয়োগকর্তাকে ফোন করা হলেও তারা দায়িত্ব এড়িয়ে যান। ফলে আকামা থাকার পরও তাদের ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে থাকা কিছু বাংলাদেশিকেও আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

মাত্র পাঁচ মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন কুড়িগ্রামের আকমত আলী। কিন্তু তার সে স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। তার অভিযোগ, আকামার মেয়াদ আরো দশ মাস থাকলেও তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, সেখানে ফোন করা হলেও সৌদি মালিক তার ব্যাপারে পুলিশকে কিছু বলেননি। গোপালগঞ্জের সম্রাট শেখের ক্ষোভ, আট মাসের আকামা ছিল তার। নামাজ পড়ে বের হলে পুলিশ তা?কে গ্রেফতার করে এবং কোনো কিছুই না দেখে দেশে পাঠিয়ে দেয়। ফেরত আসা সাইফুল ইসলামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। তার অভিযোগ, আকামার মেয়াদ দেখানোর পরও তাকে দেশে পাঠানো হয়। সাইফুল বলেন, ‘মাত্র ৯ মাস আগে সৌদি গিয়েছিলাম, আকামার মেয়াদও ছিল ছয় মাস।’ চট্টগ্রামের আবদুল্লাহ ব?লেন, ‘আকামা তৈরির জন্য আট হাজার রিয়াল জমা দিয়েছিলাম কফিলকে। কিন্তু, গ্রেফতারের পর কফিল কোনো দায়িত্ব নেয়নি।’ ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘ফেরত আসা কর্মীরা যেসব বর্ণনা দিচ্ছেন, সেগুলো মর্মান্তিক। সাধারণ ফ্রি ভিসার নামে এক নিয়োগকর্তার বদলে আরেক জায়গায় কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লে অনেক লোককে ফেরত পাঠানো হতো। কিন্তু, এবার অনেকেই বলছেন, তাদের আকামা থাকার পরও ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই অনেককে ফিরতে হচ্ছে, যারা খরচের টাকাও তুলতে পারেননি। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে এই দায় নিতে হবে। পাশাপাশি নতুন করে কেউ যেন গিয়ে এমন বিপদে না পড়েন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’ ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের দেওয়া তথ্য মতে, এই বছর এখন পর্যন্ত ১৬ হাজারের বে?শি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরব। এরই মধ্যে অক্টোবর মাসেই ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ৮০৪ জনকে ব্র্যাক সহযোগিতা করেছে। আর এক দিনে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কর্মী ফেরত এসেছে গত শুক্রবার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close