বগুড়া প্রতিনিধি

  ১৯ অক্টোবর, ২০১৯

দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে মহাস্থানের আগাম সবজি

বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে মহাস্থানের বিখ্যাত পাইকারি সবজির হাট আগাম শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে। প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত ট্রাকে পাইকাররা সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। মাত্র ১২ কিলোমিটার দূর থেকে আনা সবজি বগুড়া শহরে বিক্রি হয় প্রায় দ্বিগুণ দামে। আর রাজধানীসহ অন্যান্য এলাকায় দাম আরো বেশি। চাষিরা কম দামে বিক্রি করলেও ভোক্তারা কিনছেন বেশি দামে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের পোয়াবারো। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার মহাস্থানহাটসহ বগুড়ার কয়েকটি হাট ও বাজার ঘুরে এ চিত্রই দেখা গেছে।

শুরুর দিকে দাম বেশি হলেও গত কয়েক দিন হলো প্রচুর পরিমাণে সবজি আসায় দাম কিছুটা কমে এসেছে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় এ অঞ্চলের চাষিরা আগাম সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। মোকামতলার চাষি রফিকুল ইসলাম, শাঁখারিয়ার আবদুল হাই, লাহিড়ীপাড়ার মোজাম্মেল, মহাস্থানের মাহবুব জানান, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের তদারকিতে এবার তাদের ফলন ভালো হয়েছে।

শহরের মালগ্রাম থেকে আসা সবজি ক্রেতা লিটন রহমান জানান, শীতের সবজি একটু বেশি দাম হলেও নতুন সবজি কিনতে এসেছি। মহাস্থান হাটের পাইকার আমজাদ হোসেন ও গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত ট্রাক রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। শুরুতে ট্রাকের পরিমাণ ছিল ২০ থেকে ২৫টি। হাটে সবজির বেচাকেনাও বেড়েছে। সবজি ব্যবসায়ী মিলন আলী বলেন, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ফেনী, সিলেট অঞ্চলের বাজারে যাচ্ছে বগুড়ার সবজি। প্রতি কেজিতে তাদের খরচ পড়ে ৭ থেকে ৮ টাকা। একটি ট্রাকের ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার কেজি। ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সবজি তারা পাঠাবেন। এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা এবং লাউ পাঠানো হচ্ছে।

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকালে মহাস্থান হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ ও মুলা বস্তায় ভরে, পরিমাপ করে, ট্রাকে তুলছেন শ্রমিকরা। হাটে কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়েছে। ঢাকায় পাঠানোর জন্য বেছে বেছে সবচেয়ে ভালো মানের সবজি কিনছেন পাইকার মিলন মিয়া। তিনি জানালেন, রাজধানীতে দাগওয়ালা বা সাইজে ছোট মুলা, কপি নিতে চায় না। তাই বাছাই করে পাঠানো হয়। তবে অন্য জেলার জন্য অত বাছাই করতে হয় না। বুধবার হাটবার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া ফুলকপি এখন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় নেমেছে। প্রতি মণ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মুলা এখন ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়, প্রতি কেজি শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা থেকে এখন ৮০ টাকায়, করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকায়, বাঁধাকপি প্রতি পিস ১৫ টাকা থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাশেই খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আরেক পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত রাজাবাজারে প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। পাশেই ফতেহ আলীবাজার ও শহরে ভ্যানে করে বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের কাছে সে দাম আরো একধাপ বেড়ে যায়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার মহাস্থান হাট থেকে ফিরে শহরে ফতেহ আলী বাজারের দেখা গেছে, ৩০ টাকার ফুলকপি ৪৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাঁধাকপিসহ অন্যান্য সবজির বেলাতেও একই অবস্থা। মহাস্থান হাট থেকে শহরে খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে বাজার মনিটরিং করার দাবি সাধারণ ভোক্তাদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close