নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ অক্টোবর, ২০১৯

উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্রাটের মুক্তির দাবি মায়ের

চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তানের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গ্রেফতার সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের মা সায়রা খাতুন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি একজন মা হিসেবে আপনার কাছে আকুতি করছি, ওকে মুক্ত করে দিন। উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়ে আমার সন্তানের জীবন রক্ষা করুন।’ গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সম্রাটের মায়ের পক্ষে তার বোন ফারহানা চৌধুরী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এতে বলা হয়, গ্রেফতারের ১০ দিন আগে থেকে সম্রাট অফিসে ছিলেন না। তার অফিস ছিল অরক্ষিত। শরীর খারাপ থাকায় তিনি অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। তার অফিসে মদ, ইয়াবা ও পিস্তল কিছুই ছিল না। আমাদের আশঙ্কা, এটি পরিকল্পিত সাজানো নাটক ছাড়া কিছুই না।

লিখিত বক্তব্যে সম্রাটের মা সায়রা খাতুন চৌধুরী বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর আমার সন্তানকে গ্রেফতার করা হয়। যে স্থান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়, সে স্থান থেকে কোনো প্রকার অস্ত্র কিংবা মাদক পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম তাকে কাকরাইল অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রায় চার ঘণ্টা ১৭ মিনিট তার অফিসে তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সম্রাটকে নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশের সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু লোক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে এবং অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ওইসব লক্ষ করা যায়নি।’

বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্রাটের জড়িত থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রতিটি ক্লাব পরিচালনা করার জন্য কমিটি রয়েছে। খেলাধুলা পরিচালনার জন্য ওইসব ক্লাব থেকে নিপুণ খেলা পরিচালনার জন্য ক্লাব কর্তৃক প্রকাশ্যে ডাক (লিজ) দেওয়া হয়। আমার সন্তান সম্রাট কোনো ক্লাবের পরিচালনা কমিটির সদস্য নয় এবং ডাক গ্রহণকারীও নয়। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হচ্ছে।’

সায়রা খাতুন চৌধুরী আরো বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের যে মামলায় তাকে ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে, সে মামলার আদেশ আমরা এখনো হাতে পাইনি। ক্যাঙ্গারু বাংলাদেশি বন্যপ্রাণী নয় এবং বাংলাদেশে এই প্রাণীটির বিচরণ দেখা যায় না। যেহেতু ক্যাঙ্গারু বাংলাদেশে শিকার হয়নি, এটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মধ্যে পড়ে না। ক্যাঙ্গারুর উক্ত চামড়াটি এক প্রবাসী বাংলাদেশি তাকে উপহার হিসেবে প্রদান করে বিধায়, এটি আইনবিরোধী কাজ নয়। এজন্য সাজা দেওয়ার বিধান নেই।’

সম্রাট দলে অনুপ্রবেশকারী নয় দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্তানের মুক্তি দাবি করেন মা সায়রা খাতুন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি একজন মা হিসেবে আপনার কাছে আকুতি করছি, সম্রাটের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে ওকে মুক্ত করে দিন। তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়ে আমার সন্তানের জীবন রক্ষা করুন।’

এর আগে সম্রাটের শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে তার মা সায়রা খাতুন চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৯৯ সালে ডা. দেবী শেঠীর অধীনে সম্রাটের ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়। তখন থেকে সম্রাট অসুস্থ শরীর নিয়ে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার সম্রাটের ভাল্ব প্রতিস্থাপন করার কথা ছিল সিঙ্গাপুরে। কিন্তু ২৮ সেপ্টেম্বর ছিল প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে গত সোমবার ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে কোরানখানি, মিলাদ মাহফিল ও রক্তদান কর্মসূচি থাকায় তার সিঙ্গাপুরে যাওয়া হয়নি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close