কলকাতা প্রতিনিধি

  ২২ আগস্ট, ২০১৯

কাশ্মীরে সংঘর্ষে এক ‘সন্ত্রাসী’ ও পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

কাশ্মীরের কৃষ্ণা ঘাঁটি সেক্টরে গত মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া সেনা ও সন্ত্রাসবাদী রাতভর সংঘর্ষে নিহত হয়েছে এক সন্ত্রাসী এবং প্রাণ হারিয়েছেন আরো এক পুলিশ কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে শুরু হয় এ সংঘর্ষ। দু-তিনজনের একটি সন্ত্রাসবাদী দল আক্রমণ শুরু করে ভারতীয় সেনাদের ওপর। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনা ও পুলিশের যৌথ দল। রাতভর গুলির লড়াইয়ের পর নিহত হয় এক সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসবাদীদের ছোড়া গুলিতে শহীদ হন পুলিশের এক অফিসার। জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ হওয়ার পর এটাই প্রথম এনকাউন্টার। সেনা সূত্রে খবর, দু-তিনজন জঙ্গি সেখানে রয়েছে। গোটা এলাকা ঘিরে জঙ্গি খোঁজে তল্লাশি চলছে। এর আগে মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীরে এক সেনা অফিসারসহ ছয় ভারতীয় জওয়ান শহীদ হয়েছে বলে যে দাবি পাকিস্তান করেছিল, তা সর্বৈব মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। ভারতীয় সেনা সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে পাকিস্তানের পক্ষে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাও ?অস্বীকার করেছে ভারত। পাকিস্তানের দাবি নস্যাৎ?? করে ভারতীয় সেনা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারত নয়, কাশ্মীরের কৃষ্ণা ঘাঁটি সেক্টরে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।

জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রকে সতর্ক করল একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, কাশ্মীরের জনমনে ক্রোধ চরম পর্যায়ে রয়েছে। যেকোনো সময় সেই ক্রোধের চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটতে পারে ব্যাপক হিংসাত্মক কার্যকলাপে। সম্প্রতি সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও ৩৫ প্রত্যাহার করে বিশেষ সুবিধা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। লাদাখকে কাশ্মীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীতে এখনো পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা দেখা না গেলেও গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে ফুঁসছে জম্মু-কাশ্মীরের একাংশ। ৩৭০ ধারা বিলোপের পর কাশ্মীরিদের মধ্যে একটা উদ্বেগ কাজ করছে।

কাশ্মীর সম্পর্কে অভিজ্ঞতা রয়েছে বা সেখানে কাজ করেছেনÑ এমন একাধিক অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা আধিকারিক কাশ্মীরে অশান্তির আশঙ্কা করছেন। কেন্দ্র যাতে কাশ্মীর নিয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো দ্রুত শুরু করে, সেই পরামর্শও তারা দিয়েছেন। উদ্বেগে থাকা কাশ্মীরের মানুষকে কেন্দ্রের এ পদক্ষেপের লাভজনক দিকগুলো বোঝাতে হবে; যাতে সাধারণ মানুষের মন থেকে বিভ্রান্তি দূর হয়।

৪ আগস্ট থেকে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। প্রথম সারির নেতারাও নানাভাবে বন্দি হয়ে রয়েছেন। হয় গৃহবন্দি, নয়তো কারাগারে। ফলে সেখানকার সাধারণ মানুষ নেতৃত্বহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছে। যে কারণে শ্রীনগরে বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ ছাড়া এখনো সে অর্থে হিংসা মাথাচাড়া দিতে পারেনি। শান্তিপূর্ণই রয়েছে কাশ্মীর। পাথর ছোড়ার মতো বিক্ষোভ দমনে যদিও ভেতরে ভেতরে কাশ্মীর পুলিশের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close