স্ত্রী-সন্তানকে স্বীকৃতি দিয়ে ১৮ বছর পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ইসলাম মৃধা (৪৯)। গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। প্রেম করে বিয়ে, তারপর স্ত্রীর গর্ভে সন্তান। কিন্তু পরে সেই স্ত্রী-সন্তানকে অস্বীকার করেন ইসলাম। এরপর ডিএনএ টেস্টে সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া। কিন্তু তিনি মালাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকার করেন।

এ ঘটনায় মালার বাবা মামলা করলে ২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি ঝিনাইদহের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত তাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সাজা দেন। ২০১৫ সালের ১৭ মে তাকে ঝিনাইদহ থেকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু ভালো কাজের জন্য অর্জিত রেয়াতসহ ১৮ বছর কারাভোগ করেছেন তিনি। এর মধ্যে মূল সাজা খেটেছেন ১৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন। তার অবশিষ্ট সাজা ১০ বছর ১১ মাস ১৪ দিন। তার আগেই তিনি মুক্তি পেলেন। ইসলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আজিজ মৃধার ছেলে। তার স্ত্রী মালার বাড়িও একই গ্রামে।

গতকাল শুক্রবার কারাগারে ইসলামকে গ্রহণ করতে আসেন বাবা আবদুল আজিজ মৃধা, বোন মমতাজ বেগমসহ পরিবারের চার সদস্য। তবে স্ত্রী মালা ও ছেলে মিলন উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার কে এম আবু নওশাদ ও জেলার আবু তালেব।

মুক্তির পর ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বন্দি ছিলাম। মুক্তি পেয়ে খুবই খুশি। স্ত্রী-সন্তান পরিবারের সঙ্গে বাকি দিনগুলো কাটাতে চাই। তার বাবা আবদুল আজিজ মৃধা বলেন, আদালতের নির্দেশে আমার ছেলেকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা খুবই খুশি। আগামী দিনে সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। পেছনে ফিরে দেখতে চাই না।

ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু নওশাদ বলেন, আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের অনুমতিতে ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সুপার, দুই পক্ষের আত্মীয়-স্বজন ও তাদের ছেলে মিলনের উপস্থিতিতে ইসলাম ও মালার বিয়ে দেওয়া হয়। ১ আগস্ট বিয়ের কাবিন উচ্চ আদালতে জমা দেওয়া হয়। এরপর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। আদালতের কপি পাওয়ার পর গতকাল শুক্রবার মুক্তি দেওয়া হলো।

"