নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ আগস্ট, ২০১৯

আদা-রসুনে আগুন, চড়া সবজি চাল ডাল তেল আটা স্থিতিশীল

এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ফের বেড়েছে আদা, রসুন এবং দেশি ও কক মুরগির দাম। মানভেদে প্রতি কেজি আদায় ২০ টাকা, রসুনে ৪০ টাকা বেড়েছে। আর সব ধরনের সবজি বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। এখনো চড়া মাছের বাজার। অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। আগের দামেই বিক্রি হয়েছে চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, চিনি, লবণসহ অন্যান্য মুদিপণ্য। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার ও সেগুনবাগিচাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহ পর ঈদুল আজহা। ফলে আদা ও রসুনের চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য দুটির দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে সব ধরনের সবজির খেত নষ্ট হয়েছে। যে কারণে জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকেই সবজির দাম চড়া। সহসা সবজির দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।

রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি করা চীনা আদা বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৪০ টাকা। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। যা আগে বিক্রি হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আমদানি করা চীনা রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৬০ টাকা কেজি। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৪০ টাকা কেজি। সে হিসেবে চীনা রসুনে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা, দেশি রসুনে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এছাড়া গোলমরিচ, হলুদ, মরিচের গুঁড়া, জয়ত্রী, এলাচ, দারচিনির দামও চড়া। বাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, জয়ত্রী ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা, লবঙ্গ ৮৫০ টাকা, গোলমরিচ ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, জিরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, দারচিনি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর কিছুটা নিম্নমানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

আদা ও রসুনের দাম নিয়ে ব্যবসায়ী বলরাম দাস বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ দাম বেড়েছে আদা ও রসুনের। প্রতি বছর ঈদের আগে এ রকম হয়ে থাকে। কারণ ঈদে এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়তি। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কী করার আছে, বেশি দাম দিয়ে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। হঠাৎ দাম বাড়া-কমার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের মতো রয়েছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা আর আমদানি করাটা বিক্রি করছি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।

মসলা বিক্রেতারা জানান, গত এক মাস ধরেই মসলার পাইকারি বাজার বাড়তি। পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে অন্য বছরের তুলনায় বর্তমানে মসলার বাজার বেশ ভালো অবস্থানে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। বাজারে পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হয়েছে লাল লেয়ার মুরগি। এছাড়া গরুর মাংস বাজার ভেদে বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, গত সপ্তাহের মতো চড়া দামেই বিক্রি হয়েছে টমেটো, শসা ও গাজর। বাজারভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। গাজর বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। আর শসাও আগের সপ্তাহের মতো ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে একটু কম দামে বিক্রি হওয়া সবজির মধ্যে রয়েছে পেঁপে ও মিষ্টিকুমড়া। বাজারে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। আর পেঁপে ও মিষ্টিকুমড়া বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি।

বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সালাম বলেন, বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বেড়েছে সবজির দাম। আপাতত সবজির দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে ঈদের সপ্তাহে সবজির চাহিদা না থাকায় দাম কিছুটা কমবে।

গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে সব ধরনের মাছ। খুচরাবাজারে তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হয়েছে পাঙাশ মাছ। রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, নলা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি। আর আগের দামেই বিক্রি হয়েছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close