কলকাতা প্রতিনিধি

  ২৭ জুলাই, ২০১৯

লোকসভায় একঘরে আজম খান

শুধু শাসক দলের সংসদ সদস্যরা নয়, সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সংসদ সদস্য আজম খানের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরাও। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী থেকে তৃণমূলের নুসরাত জাহান, মিমি চক্রবর্তীরাও আজম খানের বক্তব্যের নিন্দা করেছেন। সব শেষে স্পিকারের সিদ্ধান্ত, ক্ষমা চাইতেই হবে আজম খানকে। না হলে পড়তে হবে কড়া শাস্তির মুখে। তৃণমূল সংসদ সদস্যদের মধ্যে নুসরাত জাহান, মিমি চক্রবর্তীও আজম খানের এই মন্তব্যের নিন্দায় সরব ছিলেন। মিমি বলেছেন, সংসদে দাঁড়িয়ে কোনো সংসদ সদস্যই বলতে পারেন না, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। স্পিকার স্যার, সব মহিলাই আপনার কাছ থেকে বড় কোনো সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। আজম খানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভায় তিন তালাক বিল নিয়ে আলোচনার সময় রমা দেবীর উদ্দেশে হিন্দিতে আজম খান যা বলেছিলেন, তার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে। মনে হয় সব সময় আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলি। সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সংসদ সদস্য আজম খানের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে বিজেপি। রমা দেবী নিজেও প্রতিবাদ করেন। আজম খানকে ক্ষমা চাওয়া এবং বরখাস্তের দাবিতে সরব হয়েছেন বিজেপি সংসদ সদস্যরা। তাদের বক্তব্য ছিল, এই ধরনের মন্তব্য শুধু যে নারী জাতির অপমান তাই নয়, স্পিকারের চেয়ারেরও অসম্মান ও মর্যাদাহানিকর। হই হট্টগোলের মধ্যেই স্পিকারের চেয়ারে চলে আসেন ওম বিড়লা। এসপি সংসদ সদস্যের বক্তব্যের ওই অংশ বাদ দিতে বলেন স্পিকার। প্রবল চাপের মুখে পড়ে লোকসভা কক্ষ ছাড়েন আজম খান। ক্ষমা চাইতে রাজি হননি আজম খান। উল্টে তিনি বলেন, অসংসদীয় কিছু বললে তিনি ইস্তফা দিতেও রাজি। আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদের দাবি, আজম খানকে হয় ক্ষমা চাইতে হবে, নয়তো তাকে বরখাস্ত করতে হবে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্রশ্ন তুলেছেন, নারীর সম্মানের প্রশ্ন জড়িত এমন কোনো বিষয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।

সবাইকে একজোট হতে হবে। তবু কারো কারো মধ্যে এই দ্বিধা কেন, দ্বিমত কেন? যদিও এই বক্তব্যের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আঙুল দেখিয়েছেন কংগ্রেস সংসদ সদস্যদের দিকেই। কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। তিনি বলেছেন, সারা দেশ দেখছে। পাস হয়েছে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হেনস্তাবিরোধী বিল, সবাইকে এক সুরে কথা বলার দাবি করছেন স্মৃতি ইরানিও। কোনো মহিলার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তারপরও পার পেয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। স্মৃতি ইরানির আরো বক্তব্য, এটা শুধুমাত্র পুরুষ বা নারীর বিষয় নয়, গোটা সংসদকেই কালিমালিপ্ত করা। আর শুক্রবার বিজেপি সংসদ সদস্য রমা দেবী বলেছেন, আজম খান কখনো মহিলাদের সম্মান করেননি। সবাই জানেন, জয়াপ্রদা সম্পর্কে আজম খান কী বলেছিলেন। লোকসভায় থাকার ওর কোনো অধিকার নেই। স্পিকারকে আবেদন জানিয়েছেন, আজম খানকে বরখাস্ত করার জন্য। বিজেপি সংসদ সদস্য রমা দেবী দাবি তুলেছেন, আজম খানকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। শাসক দল তো বটেই, আজম খানের মন্তব্যের নিন্দায় সরব বিরোধী অধিকাংশ দলের সংসদ সদস্যরাও। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দলনেতা অধীর চৌধুরী নিন্দা করে বলেন, কংগ্রেস সব সময়ই নারীর অসম্মান, অবমাননার বিপক্ষে। কিন্তু সোনিয়া গান্ধীকেও লোকসভায় কু-কথা বলা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close