নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৫ জুলাই, ২০১৯

ডিআইজি মিজানের ভাগনে এসআই মাহমুদুল কারাগারে

দুর্নীতির মামলায় ডিআইজি মিজানুর রহমানের ভাগনে এসআই মাহমুদুল হাসানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ইমরুল কায়েস এই আদেশ দেন। দুপুরে মাহমুদুল হাসান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবেদন করেন। তবে তার জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দেন দুদকের আইনজীবীরা।

এসআই মাহমুদুলের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ আদালতকে বলেন, মাহমুদুলের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অথচ দুদকের পক্ষ থেকে তাকে কোনো ধরনের নোটিশ দেওয়া হয়নি। আইনজীবী মাহমুদুল হাসানকে নির্দোষ দাবি করে তাকে জামিন দেওয়ার আবেদন করেন।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, আসামি মাহমুদুল হাসান অর্থ পাচার আইনে অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান। শুনানির সময় বিচারক আসামি মাহমুদুলের কাছে জানতে চান, তিনি কী পদে চাকরি করেন? তার বেতন স্কেল কত? আয়কর দেন কি না? এ সময় মাহমুদুল হাসান জানান, তার মূল বেতন ১৮ হাজার টাকা। এ সময় মাহমুদুলের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ বলেন, চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে মাহমুদুল ব্যবসা করতেন।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এসআই মাহমুদুল হাসানের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে দুদকের একই মামলায় ২ জুলাই ডিআইজি মিজানুর রহমানকে কারাগারে পাঠান ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত। দুদকের মামলায় আগাম জামিন নিতে গত সোমবার হাইকোর্টে হাজির হন ডিআইজি মিজান। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়।

ডিআইজি মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে এলে তড়িঘড়ি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠায়। মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে পুলিশ অধিদফতর। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ প্রশাসন। যদিও নারী নির্যাতন, ঘুষ প্রদান, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে দুই বছর ধরে মিজানুরের নাম আলোচনায় এলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close