মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

  ২৬ জুন, ২০১৯

কুলাউড়ায় দুর্ঘটনা

উপবনের বগিতে ছিল যান্ত্রিক ত্রুটি

সিøপারের ক্লিপ নয়; যাত্রীবাহী বগির যান্ত্রিক ত্রুটিই কাল হলো উপবন এক্সপ্রেসের। এতে ঝরে গেছে চারটি তাজা প্রাণ, আহত হয়েছেন অনেকে। আর রেলপথে এমন দুর্ঘটনার ফলে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে রেলভ্রমণ। গত রোববার রাতে ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশন ছেড়ে এসে মনছড়া রেলসেতু অতিক্রম করার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রামের ট্রেন যোগাযোগ চালু হয়। আর পরের দিন সোমবার দুপুরে সরেজমিন দুর্ঘটনার স্থানের রেলপথগুলো পরিদর্শন করে দেখা যায়, অনেক স্থানের সিøপারে ক্লিপ নেই। ফলে ওই স্থানটি লুজ কানেকশন হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছিল। ট্রেনযাত্রী রিজওয়ান আহমেদও বলেন, রেলপথ যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে! ট্রেনের বগিগুলো যেন মরণবাক্স! সিলেট বিভাগের রেলপথে কোনো উন্নতি হচ্ছে না। বরং দিন দিন আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে।

তবে গতকাল মঙ্গলবার রেলওয়ের এক প্রকৌশলী জানান, সিøপারের ত্রুটি নয়; ট্রেনটির বগিতেই যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল। এদিকে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকার রেলপথের লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম রাতের অন্ধকারে চুরি হওয়ার কথা বলেও তিনি স্বীকার করেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আসলে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী উপবন ট্রেনটির বগির চাকাতে কিছু মেকানিক্যাল (যান্ত্রিক) সমস্যার কারণেই এটি দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছিল। সেই ত্রুটিপূর্ণ চাকার বগির মাঝে অতিরিক্ত যাত্রীর উঠার ফলে এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।

তিনি আরো বলেন, সিøপারে ক্লিপের জন্য গাড়ি কখনোই পড়ে না। প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত যদি সিøপারের লকগুলো না থাকে তবু গাড়ি পড়বে না; গাড়ি এগিয়ে যাবে। ক্লিপটা মূলত রেলপথকে মজবুত রাখার জন্য দেওয়া হয়েছে। আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেনÑ রেললাইনের দুটি ফর্মা বা ইনসার্ট সমান্তরালভাবে সেট করা আছে। দুই পাশের চাকাগুলো ভারসাম্যের ফলে কাঠের সিøপারে ভারসাম্য তৈরি মাধ্যমে ট্রেনটি এগিয়ে যায়।

প্রকৌশলী (পথ) মো. মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, তারপরও আমরা রেলপথের মাঝে মাঝে ওয়েল্ডিং করে রেখেছি। কিন্তু সব সিøপারের মাঝে তো আর ওয়েল্ডিং করা যাবে না। তখন লাইন চেঞ্জিং বা সিøপার চেঞ্জিং করতে গেলে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়। আরো একটি বড় ব্যাপার হলোÑ যে সিøপারের ওয়েল্ডিং খোলা হয় ওটা বাদ পড়ে যায়; ওটা আর রেললাইনে লাগানো যায় না। এজন্য আমরা ৪-৮-১২ কাঠ পরপর ওয়েল্ডিং করে রেখেছি। ওয়েল্ডিং যেগুলো আছে তা নিরাপদ আছে।

চুরির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আর যেগুলো চোর নিয়ে যায় সেগুলোর ক্ষেত্রে আরো জটিলতা পোহাতে হয়। এজন্য তদন্ত, মামলা, এজাহার প্রভৃতি আইনগত ধাপগুলো অতিক্রম করতে গিয়ে অনেক সমস্যা হয়ে যায়। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে; আমরা কমিটির রিপোর্ট হাতে পেলে একদম সঠিকভাবে বিস্তারিত বলতে পারব বলে জানান রেলওয়ের এই ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close