কূটনৈতিক প্রতিবেদক

  ২৬ জুন, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর

গুরুত্বের শীর্ষে রোহিঙ্গা ইস্যু

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমাধানের পথ মিলতে পারে। কারণ প্রতিবেশী ও সর্বোচ্চ মাত্রার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে মিয়ানমারের ওপর সব অর্থেই রয়েছে অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীনের ব্যাপক প্রভাব। রোহিঙ্গা ইস্যুতে পুরো বিশ্ব যখন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে, তখনো বরাবরই চীন আছে পাশে। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পর্ষদেও চীনের ভূমিকার কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না গণহত্যায় অভিযুক্ত দেশটির বিরুদ্ধে। এমন মত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তারা আশাবাদী, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ সফরে ঘটবে নাটকীয় কিছু। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে।

সমান্তরালে চীন শক্ত কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রাখছে বাংলাদেশের সঙ্গেও। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফর করেছেন ঢাকা। ঢাকার মন্ত্রীও গেছেন বেইজিং। এমনকি প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের করা চুক্তির পেছনেও নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করেছে চীন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরেও গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা ইস্যু।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, মিয়ানমার যেহেতু চীনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাদের কথা মানে তাই তারা বললে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে করবে বলে আশা করছি। চীন আমাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছে তাতে এটি সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। কূটনীতি নিয়ে যারা কাজ করেন, তারাও জোর দিয়ে বলছেন, এ সফরে আসবে ইতিবাচক অনেক কিছু। সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালিউর রহমান বলেন, চীন মিয়ানমারকে বলবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, চীন এই ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে। এই সফর এ ধরনের ঘোষণার একটা উপযুক্ত সময়। তবে চীনের মানসিকতার পরিবর্তন রাতারাতি হবে না। তাদের মধ্যে একটা উপলব্ধির দরকার আছে।

ওয়ালিউর রহমান বলেন, চীন হয়ত মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বলতে পারে কিংবা বলতে পারে তোমরা জাতিসংঘে আস, আমরা ভেটো দেব না।

তাদের আশাবাদ, মিয়ানমার ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও আন্তর্জাতিক মহলের চাপ এবং বাংলাদেশের সঙ্গে গতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান বদল করবে চীন।

প্রসঙ্গ, জুলাইয়ের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের কথা রয়েছে। ওই সফরে বিদ্যুতের দুই সঞ্চালন প্রকল্পে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দুই প্রকল্প হচ্ছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং শক্তিশালীকরণ প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ বিতরণে গ্রিডলাইন বা সঞ্চালন লাইন শক্তিশালীকরণ প্রকল্প।

ডিপিডিসির প্রকল্পে ১৪০ কোটি ২৯ লাখ ও দ্বিতীয় প্রকল্পটিতে ৯৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে দেশটি। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত চীন সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকালে এই দুই ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এই দুটি প্রকল্পে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হলে দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা বর্তমানের চেয়ে আরো উন্নত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close