নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ জুন, ২০১৯

হুমকি অনুভব : ফের নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহে ডিএমপি

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ আর মাদক বেচাকেনার মতো অপরাধের ‘হুমকি অনুভব করায়’ রাজধানীর নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের কাজ আবার শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে ২১ জুন পর্যন্ত। এ সময়ে মহানগরের ৫০টি থানার ৩০২টি বিটের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে একটি ফরম দিয়ে আসবেন। পূরণ করা ফরমটি পরে নির্ধারিত ফরম দিয়ে সংগ্রহ করে থানায় নিয়ে গিয়ে নাগরিকদের তথ্য পুলিশের তথ্যভা-ারে যুক্ত করা হবে। পরে মহানগর পুলিশ কার্যালয় থেকে একটি সার্ভেইল্যান্স টিম গঠন হবে। তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম থেকে কেউ বাদ পড়েছে কি না তা খুঁজতে সাত দিন কাজ করবে এই টিম।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়েজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ’ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৫ সালের শেষের দিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং পরে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হয়।

নতুন করে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ইদানীং লক্ষ্য করছি যে এখন এ কাজটি ঢিলে হয়ে গেছে। অনেকেই এখন ভাড়াটিয়ার তথ্য দিচ্ছেন না, নাগরিকরা তথ্য দিচ্ছে না। আমাদের পুলিশের মাঝেও একটা ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করছি। বছিলায় কিছুদিন আগে র‌্যাব অভিযান চালায়। সেখানে বাড়িওয়ালা কোনো ভাড়াটিয়ার তথ্য দেয়নি। এ ধরনের কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন অনুভব করা হয়।

নাগরিকদের এসব তথ্য সংগ্রহ করার ফলে রূপনগরে জঙ্গি ঘটনার রহস্য যেমন উদ্ঘাটন করা গেছে তেমনি যাত্রাবাড়ী, কাফরুল, দক্ষিণখানের খুনসহ বিভিন্ন অপরাধের রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।

নাগরিকদের এসব তথ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যভা-ারের সঙ্গে যুক্ত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিলে তা আমাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে ধরা পড়বে। রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী নেতা, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে নতুন উদ্যোগে কাজ করা হবে বলে জানান পুলিশ কমিশনার। এই কার্যক্রম পুরোপুরি সফল হলে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে পেশা, পরিচয় গোপন করে বাসা ভাড়া নেন। এই উদ্যোগের ফলে সেটা সম্ভব হবে না এবং গত তিন বছরে এর সফলতাও পাওয়া গেছে, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ায় জঙ্গিরা রাজধানীতে শিকড় গাড়ার সুযোগ পায়নি। অনুষ্ঠানের শুরুতে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, এ পর্যন্ত ৬২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৭ জনের নাম-ঠিকানা তথ্যভা-ারে যুক্ত আছে। এর মধ্যে বাড়িওয়ালা ২ লাখ ৪১ হাজার ৫০৭ জন, ভাড়াটিয়া ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৪ জন, মেস সদস্য ১ লাখ ২১ হাজার ৪০ জন, পরিবারের সদস্য ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ৮২১ জন, ব্যক্তিগত গাড়ির চালক এবং গৃহকর্মী ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৪ জন। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার জানান, কিছু বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। কিছুদিন আগে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ইউক্রেনের একটি চক্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন সময়ে নাইজিরিয়া, তানজানিয়ার নাগরিকদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিষয়টি সরকারে উচ্চ মহলের নজরে আছে। এই বিদেশি প্রতারক, অপরাধী যারা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে, তাদের আমাদের দেশ থেকে ডিপোর্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এ ধরনের বিদেশি সংখ্যা জানাতে পারেননি পুলিশ কমিশনার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close