পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ২০ মে, ২০১৯

মমতার অভিযোগ

সিআরপিএফ-কে নিয়ে অত্যাচার বিজেপির

সাত দফায় শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গতকাল রোববার কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এমন ভোট তিনি কখনো দেখেননি। কেন্দ্রীয় বাহিনী, সিআরপিএফ-কে নিয়ে অত্যাচার করেছে বিজেপি।

শেষ দফার নির্বাচনে গোলমাল রুখতে ৯ কেন্দ্রের প্রায় প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। উপনির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ব্যারাকপুরের ভাটপাড়া। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও ভাটপাড়া বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী মদন মিত্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করেছে সিআরপিএফ বাহিনী। কাঁকিনাড়া নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন। বারাসতেও কুইক রেসপন্স টিমকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। অভিযোগ, বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়েছে বাহিনী। দেগঙ্গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে তীব্র বচসায় জড়িয়ে পড়েন সংসদ সদস্য কাকলি ঘোষ দস্তিদার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে বুথে এসে ভোট দেওয়া আর হলো না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। ভোট দিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী ও মেয়ে। বালিগঞ্জ কমলা গার্লস হাইস্কুলে ভোট দেন মীরা ভট্টাচার্য ও মেয়ে।

গতকাল রোববার ফের ঝড়ো গতিতে রাজধানীতে একের পর এক বৈঠক করেছেন তেলুগু দেশম নেতা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। প্রথমে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, পরে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে বৈঠক করেছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। পরে সন্ধ্যায় আবার ইউপিএ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে নয়াদিল্লি, তার পর লক্ষেèৗ হয়ে আবার রাজধানী নয়াদিল্লি। ফল ঘোষণার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশল ঠিক কী হবে তা ঠিক করতে এখন আক্ষরিক অর্থেই অনুঘটকের ভূমিকায় চন্দ্রবাবু নায়ডু। রাজধানীতে পৌঁছেই তিনি ম্যারাথন বৈঠক করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি প্রধান শরদ পওয়ার, লোকতান্ত্রিক জনতা দল নেতা শরদ যাদব এবং বামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে। রোববার তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য বৈঠক করেছেন রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ার এবং সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে। এর পরই তেলুগু দেশম নেতা গিয়েছিলেন লক্ষেèৗ। সেখানে তিনি বৈঠক করেন উত্তরপ্রদেশে বিজেপি বিরোধী জোটের মূল কা-ারী এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব এবং বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতীর সঙ্গে। একের পর এক বৈঠক করলেও সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন চন্দ্রবাবু। মনে করা হচ্ছে, শাসক বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বিরোধীদের ভূমিকা কী হবে তা ঠিক করতেই জোরদার শলা পরামর্শ চালাচ্ছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এলে বিজেপি যাতে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা না পায় তা নিশ্চিত করতেই বিরোধী দলগুলোকে এক সূত্রে গাথতে চাচ্ছেন চন্দ্রবাবুÑ এমনটাই জল্পনা রাজধানী নয়াদিল্লিতে।

অন্যদিকে, শেষ পর্যায়ের ভোটগ্রহণের আগেই কিছুটা বেসুরো বাজছেন বিজেপি সঙ্গী, নীতীশ কুমার। জম্মু কাশ্মীরে ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা তুলে দেওয়া থেকে প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর কিংবা অযোধ্যা ইস্যুতে কার্যত জোটের লাইনের বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন এনডিএর শরিক জেডিইউ সুপ্রিমো এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। জম্মু কাশ্মীরের ওই ধারা তুলে দেওয়া উচিত নয়, পটনায় ভোট দেওয়ার পর বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। নাথুরাম গডসে প্রসঙ্গে সাধ্বী প্রজ্ঞার ভূমিকা ‘অসহ্য’ বলেও মন্তব্য নীতীশের। একই সঙ্গে অবশ্য এও দাবি করেছেন, এবারও সরকার গঠন করবে এনডিএ জোট-ই। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কেদারনাথা সফর নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করেছে বলে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, তৃণমূল কংগ্রেস। মোদির সফরের সবিস্তার টিভি সম্প্রচার নিয়েও চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, শেষ দফার ভোটের আগে প্রচারের সময় শেষ হয়ে গেলেও আশ্চর্যজনকভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কেদারনাথ সফর দুই দিন ধরে সব জাতীয় মিডিয়া ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সম্প্রচার হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ রূপে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close