খুলনা ব্যুরো

  ২৩ এপ্রিল, ২০১৯

খুলনায় বিটিসিএলের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

তাদের ঠাটবাট রাজার মতো অফিস আদেশও মানেন না

খুলনা নগরীর শিরোমনি-বাদামতলায় বিটিসিএলের টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে জুনিয়র সহকারী ম্যানেজার গোলাম মর্তুজা, রিয়াজুর রহমান এবং নিরাপত্তা প্রহরী আয়ুব আলী খাঁনের দুর্নীতি সবারই জানা। তাদের বিরুদ্ধে সময়মতো অফিসে না আসা, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার এবং বরাদ্দকৃত টিনশেড ঘরে না থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদের ভবনে বসবাসসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তাদের ঠাটবাট রাজার মতো, চলাফেরা জমিদারি স্টাইলের। তারা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ম্যানেজারের নির্দেশেরও তোয়াক্কা করেন না। এ অনিয়মের ব্যাপারে একাধিকবার তাদের নোটিস দিয়েও কোনো ফল হয়নি। এদিকে এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির দুই সদস্য শিরোমনি টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন। সরেজমিন তদন্তকালে তারা উল্লিখিত অভিযোগগুলোর সত্যতা পেয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিরোমনিস্থ বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটিডের (বিটিসিএল) টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জুনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজার গোলাম মর্তুজা ও রিয়াজুর রহমান এবং নিরাপত্তা প্রহরী আয়ুব আলী যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি শিকর গেড়ে বসেছে। বিশেষ করে কর্মস্থলে নিয়মিত দেখা মেলে না উল্লিখিত এই দুই জুনিয়র কর্মকর্তার। তবে মাঝে মধ্যে এলেও অফিস সময়ের অনেক পর আসেন। এছাড়া অনুপস্থিত কার্যদিবসের হাজিরা সপ্তাহে একবার অফিসে এসে খাতায় স্বাক্ষর করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন তারা। দাবি করেছেন, অনেক সময় অফিসে আসলেও সব সময় স্বাক্ষর করা হয় না, এটি হয়তো ভুলে হতে পারে। এদিকে কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী মো. আয়ুব আলী খাঁন দীর্ঘদিন ধরে এখানে জমিদারি কায়েম করেছেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও তিনি ২০১২ সালের জুলাই মাস থেকে অদ্যাবদি অবৈধভাবে কর্মকর্তাদের (এফ-টাইপ) ভবনে বসবাস করছেন। যদিও তার জন্য নির্ধারিত টিনশেড কোয়ার্টার রয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির জোরে তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘ সাত বছর ধরে এফ-টাইপ ভবন দখল করে রেখেছেন।

এছাড়া তিনি অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে হিটার ব্যবহার করছেন।

টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. জহুরুল হক বলেন, নিরাপত্তা প্রহরী আয়ুব আলীকে তিনি একাধিকবার এফ-টাইপ ভবন ছাড়তে নোটিস দিয়েছেন। কিন্তু তিনি বাসা ছাড়েননি, বরং বহিরাগতদের দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাছাড়া শুধু মর্তুজা ও রিয়াজুর নন অফিসের সব কর্মকর্তা, কর্মচারীকে নিয়মিত এবং সময়মতো অফিসে আসার জন্য একাধিকবার নোটিস দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে তদন্ত কমিটির দুই সদস্য বৃহস্পতিবার শিরোমনি টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তদন্ত টিমের সদস্য মো. মাসুদ খাঁন ও মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করেছি, ঢাকায় গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন এই দুই সদস্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close