নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯

শ্রমিক অসন্তোষের কারণ ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়া : সিপিডি

তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের সাম্প্রতিক অসন্তোষের প্রধান কারণ হিসেবে মজুরি কাঠামো নির্ধারণে ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়াকে চিহ্নিত করেছে সিপিডি। এছাড়া শ্রমিকদের কাছে মজুরি বাড়ার সঠিক তথ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ঘাটতিও খুঁজে পেয়েছে গবেষণা সংস্থাটি।

গতকাল শনিবার ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে ‘পোশাক খাতে সাম্প্রতিক মজুরি বিতর্ক : কী শিখলাম?’ শীর্ষক সংলাপে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সিপিডি।

এ ধরনের সমস্যা এড়াতে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেছে সংস্থাটি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ সুপারিশের প্রশংসা করেছেন। তবে শিল্প মালিকরা জানিয়েছেন, এ সুপারিশ এদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়।

এ মাসের শুরুতে তৈরি পোশাক শিল্পে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের পর দেখা দেয় শ্রমিক অসন্তোষ। পরে সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি গ্রেডে সংশোধন এনে মজুরি কাঠামো সংস্কার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর অঞ্চলের ৬১ জন শ্রমিক, কারখানা মালিক ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ অসন্তোষের কারণ খুঁজে বের করার প্রয়াস চালায় সিপিডি। মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে যথার্থ প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়নি বলে সংস্থাটি মনে করে। তারা বলছে, মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গ্রেডভিত্তিক তারতম্য সৃষ্টি হওয়ায় শ্রমিকদের মাঝে অঞ্চল ও গ্রেডভেদে মিশ্র উপলব্ধির জন্ম দেয়। পাশাপাশি তারা বলেছেন, নতুন মজুরি সম্পর্কে শ্রমিকদের পূর্বধারণা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ অধিকাংশ মালিকই নেননি।

সুপারিশগুলো : মজুরির পরিবর্তন বিষয়ে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো। ভবিষ্যতে মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগের সময় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আরও বেশি মতবিনিময়। নারী শ্রমিকদের তাদের গ্রেড, মজুরি ও অন্যান্য আর্থিক ইস্যুগুলো আরও ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া। শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে আরও কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা। মজুরি আন্দোলনের পর শ্রমিকদের নতুন করে হয়রানি থেকে বিরত থাকা। মজুরি বৃদ্ধির চাপ কারখানাগুলো কীভাবে সামলাবে সেজন্য ব্রান্ড ও বায়ারদের উচিত যৌথভাবে একটি কৌশল নির্ধারণ করা।

অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে এ আলোচনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টচার্য। আলোচনায় আরো অংশ নেন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, শহিদুল আজিম, মুমীনুর রহমান, শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ, বাবুল আকতার, কাজী রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

টিপু মুনশি মালিকপক্ষকেও গড়িমসি না করে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন মজুরি কাঠামোয় গ্রেডের সংখ্যা কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব দেন। বজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান দাবি করেন, পোশাক শিল্পে সরকারের প্রণোদনা বাড়ানোর কথাটিও সঠিক নয়। সিপিডির সুপারিশগুলো বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে মেলে না বলেও দাবি করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ বলেন, শ্রমিকরা তাদের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হন। সেখানে পুলিশ যদি তাদের ওপর আঘাত করে, তার প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে, সেটা সবারই জানার কথা। তিনি শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা করার ওপর গুরুত্ব দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close