ঢাবি প্রতিবেদক

  ২২ জানুয়ারি, ২০১৯

ডাকসু নির্বাচন

অনিয়মিত শিক্ষার্থীদেরও ভোটে চান উপাচার্য!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ভোটার করার পক্ষে উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান। তবে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে কারা ভোটার ও প্রার্থী হবেন, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।

ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই (যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়ছেন) প্রার্থী হতে পারেন। গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা কমিটিও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মত দিয়েছে। উপাচার্যের চাওয়া পূরণ করতে হলে ভোটের আগেই গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করতে হবে। চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন করার লক্ষ্যে অটল রয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সভা শেষে ব্রিফিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কথা জানান। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ১৩টি সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। উপাচার্যের সভাপতিত্বে সভায় ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পরিমার্জনে গঠিত কমিটির পাঁচ সদস্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ১৯৯১ সালের সংশোধনী অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভোটার ও প্রার্থী দুটোই হতে পারেন। তবে যারা এমফিল ও পিএইচডি করছেন, ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলেও তারা প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগে সন্ধ্যাকালীন কোর্স বা অন্য কোনোভাবে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখা শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না।

ব্রিফিংয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আলোচনায় মূলত দুটি বিষয় ছিল নির্বাচনী আচরণবিধি আর ডাকসুর গঠনতন্ত্র এই দুই বিষয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা তাদের সুপারিশ বা বক্তব্য দিয়েছে। বেশিরভাগ ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা ভোটার হবেন, তারাই যেন প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পান। এই পয়েন্টে আমরা সবাই একমত। সভায় সহাবস্থান নিয়ে কথা হয়েছে, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র কোথায় হবে, সে বিষয়েও কথা হয়েছে। গঠনতন্ত্রে যেভাবে বলা হবে, ভোটকেন্দ্র সেখানেই হবে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে সিন্ডিকেটে।’

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বর্তমানে চাকরির বয়সসীমা ৩০ রয়েছে। আমরা চাই, ডাকসুতে প্রার্থিতার সীমা যেন ২৯ বা ৩০ করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার পর যারা এমফিল ও পিএইচডি করছেন, তাদের আমরা নিয়মিত ছাত্র হিসেবে ধরার দাবি জানিয়েছি। তবে সন্ধ্যাকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীদের আমরা নিয়মিত বলতে পারছি না।’

পরিবেশ পরিষদের সভায় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে যোগ দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার। সভা শেষে আকরামুল হাসান তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

পরে আকরামুল হাসান বলেন, ‘মধুর ক্যানটিন ও আবাসিক হলগুলোতে সহাবস্থান নিশ্চিত হবে, এমন একটি সিদ্ধান্ত পরিবেশ পরিষদে কার্যকর হওয়ার পরই ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে। কারা ভোটার ও প্রার্থী হবেন, সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যেহেতু দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে, তাই আমরা প্রস্তাব রেখেছি যারা হল সংসদ ও ডাকসুর ফি দেন, তাদের সবার জন্য ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রটি উন্মুক্ত করতে হবে।’

ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘প্রার্থিতার সীমা ও ভোটকেন্দ্রের বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। যারা হল সংসদ ও ডাকসুর ফি দেন এবং কোনো হলের সঙ্গে সংযুক্ত, তাদের ডাকসুর ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছি। হলে যেহেতু সহাবস্থান নেই, তাই ভোটকেন্দ্রগুলো হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে করার ব্যাপারটি আমরা আবারও সভায় উত্থাপন করেছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close