বরিশাল প্রতিনিধি

  ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯

উপজেলা নির্বাচন

বরিশালে সরগরম আ.লীগ অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার পর পরই ফের সরগরম হয়ে উঠেছে বরিশালের রাজনৈতিক ময়দান। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। দলটির অর্ধডজন নেতা প্রার্থী হওয়ার জন্য শুরু করেছেন নানা তৎপরতা। কেউ কেউ লবিং তদবির শুরু করেছেন হাইকমান্ডের সঙ্গে। তবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো নীরব রয়েছেন বিএনপির নেতারা, তারা অপেক্ষায় আছেন দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকে।

মুলাদী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার খান জানিয়েছেন, তারা কেন্দ্রের সিদ্বান্তের অপেক্ষায় আছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং মার্চ মাসে ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নানা কৌশলে প্রাক-প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন।

এবারে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় বরিশাল সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার নাম ওঠে এসেছে। এদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টুসহ চারজন। অন্যরা হলেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহামুদুল হক খান মামুন, বরিশাল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মো. আনোয়ার হোসাইন, চরকাউয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি। এছাড়াও পদোন্নতির স্বপ্ন দেখছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ শাহীন ও রেহানা বেগম।

নির্বাচন প্রসঙ্গে সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ১০টি ইউনিয়ন গঠিত এই ইউনিয়নে আমি পাঁচ বছর কাজ করেছি। নির্বাচিত হয়ে সমস্যা চিহ্নিত করতে আর বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে গিয়েই সময় কেটে গেছে। তাই আমার অসমাপ্ত উন্নয়ন সম্পন্ন করতেই আরো পাঁচটি বছর প্রয়োজন। জনগণের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। তারা আমাকে ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে এলাকার উন্নয়নের সুযোগ দেবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে নদীবেষ্টিত মুলাদী উপজেলায়। ওই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান মিঠু খান, যুগ্ম সম্পাদক মইনুল আহসান সবুজ কাজী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মোস্তাক আহমেদ সেন্টুর বড়ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান নিলু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সম্পাদক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী জহির উদ্দিন খসরু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও সফিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম মজিবর রহমান নলীর ছেলে মশিউর রহমান সুমন, কাজী মইনুল আহসান সবুজ, জাতীয় পার্টির উপজেলা সভাপতি মো. হারুন-অর রশিদ খান। গৌরনদী উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সাধারণ ভোটারদের আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তরুণ নেতা শিল্পপতি আলহাজ মো. নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী। এ উপজেলায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আরো রয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম জয়নাল আবেদীন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মিয়া। এ এলাকায় আওয়ামী লীগের নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটারদের আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাহিদা আক্তার। বাবুগঞ্জ উপজেলার সাধারণ ভোটারদের আলোচনার অগ্রভাগে রয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন। একইভাবে বাকেরগঞ্জ, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, বানারীপাড়া ও উজিরপুর উপজেলায়ও বর্তমান ও নতুন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের একাধিক প্রার্থী কৌশলে মাঠ গোছাতে ও দলের সিনিয়র নেতাদের সান্নিধ্য পেতে লবিং করে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, এখানকার ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাকিয়ে আছেন বরিশাল আওয়ামী লীগের অভিভাবক ও জেলা সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর দিকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, আওয়ামী লীগ লবিং বাণিজ্য করে না। যার যোগ্যতা আছে তাকেই মনোনয়ন দেবে দলীয় ফোরাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close