আমতলী (বরগুনা) থেকে মো. আবু সাইদ খোকন

  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৯

নিশানবাড়ীয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু ২০২২ সালে

দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং খুব কম হচ্ছে। কোনো সমস্যা বা দুর্ঘটনা না ঘটলে বিদ্যুৎজনিত ভোগান্তি মানুষের নেই বললেই চলে। বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইনের বরিশাল স্টেশনের পর সমস্যা দেখা দিলেও ভোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পটুয়াখালী ও বরগুনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সাময়িক সমস্যা মেটানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিষয়ে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ-অনুযোগের হার নিম্নমুখী। এ অঞ্চলে এখন নতুন আশার আলো তালতলীর নিশানবাড়ীয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। নিশানবাড়ীয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চীনের ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড’ ও বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি। ৩০৭ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হচ্ছে ২০২২ সালে। নিশানবাড়ীয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে লোডশেডিং কী তা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ভুলে যাবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

নির্মিয়মান পরিচ্ছন্ন কয়লা প্রযুক্তি সম্পন্ন পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঘিরে বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়ায় ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য চলছে। চীনের ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড’ ও বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি। ২০২২ সালে কয়লাভিত্তিক এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সূত্র সমূহ ও আইসোটেকের মিডিয়া অ্যাডভাইজার ফিরোজ চৌধুরী জানিয়েছেন, সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে এ প্রকল্পে। পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেটাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এখন সেখানে স্থানীয় বসবাসকারীদের জন্য পুনর্বাসন কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সেখানে বর্তমানে পানি উন্নয়নের বোর্ডের জমিতে ১০৪টি পরিবার বসবাস করে। তাদের প্রত্যেককে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এ ছাড়া সেখানে নির্মিত হবে ৫০ শয্যার হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দির। থাকবে সুপেয় পানিরও ব্যবস্থা। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে সাড়ে তিন হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালিত হবে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা কয়লার মাধ্যমে। সেজন্য পায়রায় নির্মাণ করা হচ্ছে বড় কোল-ইয়ার্ড। আমদানি করা কয়লা সরাসরি গভীর সমুদ্র থেকে এই কোল-ইয়ার্ডে আসবে। কয়লাভিত্তিক হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিবেশবান্ধব করার পরিকল্পনা সরকারের। বাংলাদেশের সর্বাধুনিক পাওয়ার প্লান্ট এখানে স্থাপিত হচ্ছে। আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্লান করা হচ্ছে। শকস অ্যান্ড নকসকে কন্ট্রোল করার জন্য ডি-সালফারাইজেশন প্যান বসানো হবে। কয়লা যেন ছড়িয়ে না যায়, সে ব্যবস্থাও রাখা হবে। পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী মো. জামাল উদ্দিন বিশ্বাস জানান, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে চিরতরে দূর হবে লোডশেডিং এর সিস্টেমই থাকবে না। মানুষ নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা পাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close