মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

  ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮

এবার চমক দেখালেন সুলতান মনসুর

মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীক কখনো জয়ী হতে পারেনি। এমনকি তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় অবস্থানেও আসতে পারেনি বিএনপির কোনো প্রার্থী। বরং ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে এ আসনে দুইবার জামানত হারিয়েছে দলটি। এ আসনে প্রতি নির্বাচনে চমক থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দলীয় প্রতীকের চেয়ে এখানে সব সময় এগিয়ে থাকে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা। এবার ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে লড়ে জয়ী হলেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। জয়ী হয়ে এক নতুন ইতিহাসও গড়লেন তিনি। মৌলভীবাজার-২ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মোট ৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে সুলতানের ধানের শীষ নিয়ে পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৭৪২ ভোট, নৌকা নিয়ে শাহীন পেয়েছেন ৭৭ হাজার ১৭০ ভোট।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। এ কারণে জীবনের বড় একটা সময় তাকে কাটাতে হয়েছে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ে আত্মগোপনে। ১৯৮৯ সালে ডাকসুর ভিপি পদে তার বিজয় ছিল ’৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের প্রথম আনুষ্ঠানিক কোনো জয়। তার নেতৃত্বে ’৭৫-এর পর প্রথম বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থান পায় ডাকসু ভবনে। ১৯৯৬ সালে সুলতান মনসুর নৌকা প্রতীক নিয়ে এখান থেকে এমপি হয়েছিলেন, যা ছিল নৌকার সর্বশেষ জয়। এরপর কখনো জয় পায়নি নৌকা। কখনো জিতেনি ধানের শীষ।

১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিতর্কিত একদলীয় নির্বাচনে ধানের শীষের জয় দেখানো হলেও নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী তা স্বীকৃতি পায়নি। কখনো জয় না পাওয়া এ আসনে সুলতান মনসুরের ওপর ভর করে এবার ধানের শীষ চমক দেখিয়েছেন এমনটি বলছেন স্থানীয় ভোটাররা। কারণ সুলতান মনসুরের ব্যক্তিগত ইমেজের ওপর ভর করে এখানের মানুষ ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন।

২০০৮ তে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি সুলতান। সে নির্বাচনে সুলতানবিহীন নৌকা পেয়েছিল মাত্র ২ হাজার ভোট। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৯ সালে প্রথম নির্বাচনে আসে বিএনপি। সে নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করে সৈয়দ আকমল হোসেন তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। ১৯৯১ সালে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী আতাউর রহমান নির্বাচনে এলেও মাত্র ৫ হাজার ভোট পেয়ে জামানত হারান।

১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিতর্কিত একদলীয় নির্বাচনে ধানের শীষের জয় দেখানো হলেও নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী তা স্বীকৃত নয়। ১৯৯৬ সালে সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি থেকে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে আসেন মকসুদ শাহীন। কিন্তু এবারও তৃতীয় হন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে চারদলীয় জোট থেকে ড. শফিকুর রহমান নিবার্চন করে জামানত হারান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে ধানের শীষে নির্বাচন করেন এন এম আবেদ রাজা।

এ বিষয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, আমি জনগণের ওপর আস্থাশীল ছিলাম। আমার বিশ্বাস, সব দলের লোক আমাকে ভোট দিয়েছে কারণ আমি কেমন মানুষ এ এলাকার প্রতিটি মানুষ জানে। এত কারচুপি না হলে ভোটের ব্যবধান ৭০-৮০ হাজার হতো। তিনি বলেন, মুজিব কোর্ট গায়ে দিয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলেই এমপি হয়েছি, আজীবন তাই থাকব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close