বিশেষ প্রতিবেদক, রাজশাহী

  ০১ ডিসেম্বর, ২০১৮

চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ!

এমপি দারার বিরুদ্ধে পাওনাদারদের বিক্ষোভ

চাকরি দেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ দারার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন প্রতারিতরা। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সংসদ সদস্য দারার এলাকায় আসার খবরে স্থানীয় পাওনাদাররা উপজেলার ঝলমলিয়া বাজারে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে তাৎক্ষণিক ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে অতিরিক্তি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ সময় প্রতারিতদের বিক্ষোভের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, এমপি দারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে গত ১০ বছরে এলাকার বেকার যুবকদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু দু-একজন ছাড়া কারোরই চাকরি হয়নি। তিনি বলেছিলেন, আগামীতে এমপি হয়ে সবার চাকরি দিয়ে দেবেন। কিন্তু দারা এবার দলীয় মনোনয়নই পাননি। যে কারণে গতকাল এলাকায় এমপি দারা আসার খবরে প্রতারিত পাওনাদার ও তাদের লোকজন টাকা ফেরত নিতে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

একই কথা বললেন পুঠিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার সিদ্দিক। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য দারা দীর্ঘদিন ঢাকায় অবস্থান করে গতকাল এলাকায় আসার খবর পেয়েই পাওনাদাররা টাকা ফেরত পেতে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। বাক্কার আরো বলেন, ‘ভোটের খরচ বাবদ সংসদ সদস্য দারা আমার কাছ থেকেও চার লাখ টাকা ধার নিয়েছেন।’

জিউপাড়া এলাকার পাওনাদার শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘এমপি সাহেব স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে গত কয়েক মাস আগে আমার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নেন। কিন্তু আমার চাকরি হয়নি। এবার তিনি দলীয় মনোনয়নও পাননি। সে কারণে পাওনা টাকা আদায় করতে এসেছি। বিক্ষোভে থাকা আরো ১০-১২ পাওনাদারও একই অভিযোগ করেন।’

পুঠিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহিম কনক জানান, চাকরি দেওয়ার কথা বলে দারা জিউপাড়া ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু চাকরি না দিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এমপি দারা। যে কারণেই পাওনাদারদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাওনাদারদের মহাসড়কে অবস্থানের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। তবে যানচলাচলে বিক্ষুব্ধরা কোনো বাধা দেননি বলেও দাবি করেন কনক।

এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মহিনুল ইসলাম বলেন, এমপি সাহেব এলাকার কিছু লোকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দেননিÑএমন অভিযোগ তুলে মহাসড়কে অবস্থান নেয় কিছু লোক। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে এমপি সাহেব সড়কপথে আসেননি বলেও জানান ওসি তদন্ত। তবে সংসদ সদস্য কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ ঘটনায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close