পটুয়াখালী প্রতিনিধি

  ৩০ নভেম্বর, ২০১৮

গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে স্থানীয় বিএনপির অবস্থান

আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেওয়া গোলাম মাওলা রনি পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা ও গলাচিপা) আসনটি এখন আলোচনা-সমালোচনায় তুঙ্গে। তাকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। রনি ২০০৮ সালে এ আসনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছেন এমন দাবি করেন নেতাকর্মীরা। এসব কারণে গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। প্রসঙ্গত, এ আসনে আরো দুইজনকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে বিএনপি। তারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন এবং গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খান।

দশমিনা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফখরুজ্জামান বাদল বলেন, ‘রনিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নের যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় নেতারা তীব্র নিন্দা জানাই।

এই রনি আওয়ামী লীগের এমপি থাকা অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম ও অত্যাচার চালিয়েছে। ২০১২ সালে তিনটি নাশকতার মামলা দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। জেল খেটেছি। তিনি যদি এ আসন থেকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন তাহলে স্থানীয় নেতারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন।’

গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খান দশমিনা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গোলাম মাওলা রনি বিএনপির মনোনয়ন পাবেন এটা আমরা ভাবতেও পারি না। রনি এ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন ২০১২ সালের ২২ এপ্রিলের একটি মামলায় আমিসহ ৯ বিএনপি নেতা জেল খেটেছি। এ আসনে আমরা একজন ত্যাগী নেতা চাই, যিনি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কথা ভাববেন।’

দশমিনা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল মোল্লা বলেন, ‘বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পরের দিন দশমিনায় হরতাল পালন করা হয়। ওই দিন গোলাম মাওলা রনির নির্দেশে ‘ভাইয়া বাহিনী’ বিএনপি অফিস পুড়িয়ে দেয়। অফিসে থাকা খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের ছবি পুড়িয়ে দিয়ে উল্লাস করে। তার বাহিনী দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার চালাতো। আমরা তাকে ঘৃণা করি। বিএনপি থেকে নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করা হবে। আমরা মামুন ভাইকে সমর্থন করি। তার পক্ষে আমরা নির্বাচনে কাজ করব।’

গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা জানান, ‘পটুয়াখালী-৩ আসনে তিনজনকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে হাইকমান্ড। এতে কিছুটা দ্বিধায় পড়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তবে আগামী ৮ তারিখ বিএনপির পক্ষ থেকে প্রার্থী নিশ্চিত করা হতে পারে। তখন যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষে কাজ করবে স্থানীয় বিএনপি।’

ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন এ বিষয়ে সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মামুন বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে একদলের নেতা আরেক দলে অবস্থান নেয়, এটা আমি ঘৃণা করি। আমাকে কেন্দ্র মূল্যায়ন করবে এটা আশা করি।’

সাবেক এমপি ও গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহজাহান খান বলেন, ‘আমি পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। এ আসনটি মূলত আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল। সেখান থেকে ১৯৯৫ সালে আমি বিএনপির হাল ধরি। ১৯৯৬ সালে এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। আমার সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে, তারা আমাকে চান। যদি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ পাই তাহলে এ আসনে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close