নিজস্ব প্রতিবেদক
এবার উপজেলাতেও হচ্ছে গণিত অলিম্পিয়াড
দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে গণিত ভীতি। এই ভীতি কাটাতে প্রাথমিক স্তর থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রাথমিক স্তরের ১৭টি উপজেলায় ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজনের নতুন পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল রোববার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অডিটোরিয়ামে নতুন এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশের ১৭টি জেলার ১৭ উপজেলার ৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে গণিত অলিম্পিয়াডের আওতাভুক্ত করা হবে। দেশে বিদেশে গণিত শিক্ষার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের গণিত ভীতি দূর হবে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাকে মানসম্মত করতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পাইলট প্রকল্প সফল হলে দেশের প্রায় ৬৫ হাজার শিক্ষার্থীকে এর আওতায় আনা হবে।
বক্তব্য শেষে মন্ত্রী এই প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, দেশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এগিয়ে গেলেও মানের দিক থেকে দুরবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা না দিতে পারলে তারা পিছিয়ে পড়বে। কোয়ালিটি শিক্ষা ছাড়া দেশের গণতন্ত্রকেও জাগ্রত করা সম্ভব হবে না।
এই শিক্ষাবিদ আরো বলেন, প্রাথমিক স্তরে গণিত বিষয়ে ভীতি অনেক বেশি দেখা যায়। গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজনের মাধ্যমে এ থেকে বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া আমাদের উন্নয়ন সম্ভব না। এ জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের গণিতের ওপর পারদর্শী করে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতিকে আনন্দময় করে তুলতে হবে। শুধু পরীক্ষাতে বেশি নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতা থেকে শিক্ষার্থীদেরকে বের করে আনতে হবে।
বিশেষ অতিথি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পাবলিক পরীক্ষা রাখা উচিত না বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ছোট কোমলমতি শিশুদের আনন্দ পাঠ বা খেলাধুলার মাধ্যমে শেখানো উচিত। জোর করে খুদে শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষা চাপিয়ে দিয়ে ভালো কিছু আশা করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। এটি কাটিয়ে তুলতে হবে। আশা করি এই অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে গণিতের ওপর পারদর্শী করা সম্ভব হবে। আমাদের দেশের চার কোটি শিক্ষার্থীকে যদি সঠিকভাবে শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে দেশ এমনিতেই এগিয়ে যাবে। এই অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় অন্তত একটি মেডেল পেলেও ওই শিক্ষার্থীকে দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. এ এফ এম মনজুর কাদির। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃদ, পিটিআইয়ের প্রশিক্ষক, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
"