গোপালগঞ্জে ভুয়া ওয়ারিশ-সনদ ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে জমির নামপত্তনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলএ শাখা থেকে রেলওয়ের ভূমি অধিগ্রহণের অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে এক জালিয়াত চক্র। সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের নামে ভুয়া ওয়ারিশ-সনদ দিয়ে ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে চক্রটি দুই দফায় দুটি চেকের মাধ্যমে ওই টাকা তুলে নেয়। এদিকে রেলওয়ে কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত আরো ৪২ শতাংশ ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ দুটি চেকের মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা জালিয়াত চক্রটি উত্তোলনের চেষ্টা করে। বিষয়টি অবগত হয়ে ভূমির প্রকৃত মালিক মো. গোলাম মোস্তাফা চৌধুরীর ছেলে সাবু চৌধুরী এলএ শাখায় আবেদন দাখিলের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের বাকি টাকা প্রদানে আপত্তি করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৮৭ নম্বর কারালগাতী মৌজার আরএস ৭৭নং খতিয়ানের ২.৫০ একর ভূমির প্রকৃত মালিক অমরেন্দ্রনাথ রায়গং ও বিপীন বিহারী বিশ্বাস। যাদের কাছ থেকে মো. গোলাম মোস্তফা চৌধুরী খাজনা মোকদ্দমার ডিক্রি মূলে স্বত্ববান হন। কিন্তু জালিয়াত চক্রটি বিপীন বিহারী বিশ্বাসের ভুয়া উত্তরাধিকারী দাবি করে দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকবার হোসেনকে দিয়ে ভুয়া ওয়ারেশন সনদপত্র তৈরি করে। পরে ওই ভুয়া ওয়ারিশ-সনদপত্র দিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের যোগসাজশে গোপালগঞ্জ ভূমি অফিস থেকে বাদল বিশ্বাসের নামে ভুয়া নামপত্তন করে। অতঃপর ওইসব জাল কাগজপত্র গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় জমা দিয়ে রেলওয়ে কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহণকৃত ৪৫ শতাংশ ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করে জালজালিয়াত চক্রটি ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। দুর্গাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি উত্তরাধিকারী যাচাই না করে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত ওয়ারিশ-সনদের ওপর ভিত্তি করে বাদল বিশ্বাসের নামে নামপত্তনের প্রস্তাব করি।’ ইউপি চেয়ারম্যান আকবর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওয়ারিশ-সনদে যে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে তা আমার স্বাক্ষর বলে মনে হচ্ছে না। ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলতে পারবেন কে বা কাহারা আমার স্বাক্ষর জাল করেছে।’

"