নিজস্ব প্রতিবেদক
শিশু নিনাদ হত্যা
দুই মাসেও কূলকিনারা হয়নি, হতাশ পরিবার
দুই মাস পেরিয়ে গেলেও রাজধানীর বনশ্রীর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী সাফওয়ান আল নিনাদ (৮) হত্যার কোনো কূলকিনারা হয়নি। হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। ডিবি পুলিশ এ ঘটনায় জহিরুল ইসলাম নামে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। নিহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ১৭ জুন ঈদের দিন সকালে মেরাদিয়ার ভূঁইয়াপাড়ার ৫৪৪ নম্বর প্লটের একটি বেকারির পাশের নর্দমায় রাখা ব্যাটারিচালিত একটি ভ্যানের ওপর শিশু নিনাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিনাদের গলায় ফাঁসের চিহ্ন, পায়ে ও হাতে মারধরের দাগ ছিল। ২১৫/৫ মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ার বাসায় বাবা স্বপন ব্যাপারী ও মা সানজিদা আক্তারের সঙ্গেই থাকত নিনাদ। সে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। স্বজনদের অভিযোগ, জায়গা-জমির বিরোধে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে ওই শিশুকে। সন্দেহভাজনদের মধ্যে রয়েছে নিনাদের নানি ছালেহা বেগমের বড় ভাই সালাহউদ্দিন ও তার দুই ছেলে ফয়সাল ও আরাফাত, মেজো ভাই মৃত আলাউদ্দিনের দুই ছেলে টিপু ও আজহার, ছোট ভাই জহিরুল ইসলাম, ছালেহা বেগমের দুই চাচাতো ভাই ফিরোজ ও ফুলু মিয়া। এ ঘটনায় নিনাদের বাবা বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি এক সপ্তাহ পর তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর হয়। নিনাদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে এখনো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পলিথিন দিয়ে ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের গলার সম্মুখ অংশে অর্ধচন্দ্রাকৃতির কালশিটে দাগ রয়েছে। ডান কাঁধের পেছন দিকে হালকা কালো রঙের দাগ।’
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছি। তবে তার কাছ থেকে এ হত্যায় জড়িত থাকার কোনো তথ্য উদ্ঘাটিত হয়নি। এখন পর্যন্ত এই শিশু হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত, তার কোনো ক্লু উদ্ধার হয়নি। তবে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি। লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে, সে অনুযায়ী ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।’
নিহত শিশুর মামা এস এম মুন্না গতকাল বলেন, এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত থাকার ব্যাপারে আমরা যাদের সন্দেহ করছি, ডিবি পুলিশ তাদের কাউকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। পুলিশ সন্দেহভাজনদের মধ্যে জহিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে না নিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। গ্রেফতারকৃত জহিরুল ইসলামের স্ত্রী রাণী ও তার দুই মেয়েকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো রহস্যজনক কারণে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না।’
নিনাদের স্বজনদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও এই শিশুর খুনিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। হত্যাকান্ডের বিচার চেয়েছে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরাও।
"