আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে হত্যার হুমকি!
গ্রামছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবার
মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আসামি ও তার লোকজন। প্রাণনাশের ভয়ে গ্রামছাড়া হয়েছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার। গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্বামীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন রিনা বেগম ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন রিনার বাবা আবদুল জব্বার হাওলাদার, মা শাহিদা বেগম, ভাই ইলিয়াস, মামা আবদুস সোবাহান মুন্সি ও ভগ্নিপতি জাকির হোসেন।
জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার বায়বালা গ্রামের কাওসার সিকদারের বিরুদ্ধে মারধর করে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ এনে মামলা করেন স্ত্রী রিনা বেগম। এখন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে স্বামী ও তার সহযোগীরা। মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে হত্যারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এখন ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রিনা ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য ও মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে পটুয়াখালীর গলাচিপার ছৈলাবুনিয়া গ্রামের জব্বার হাওলাদারের মেয়ে রিনা বেগমকে আমতলী উপজেলার রায়বালা গ্রামের সোনা মিয়া সিকদারের ছেলে কাওসার সিকদারের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় এক লাখ টাকার স্বর্ণালংকারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেওয়া হয়। কিছু দিন যেতে না যেতেই স্বামী কাওসার মোটরসাইকেল কিনতে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এ টাকা দিতে অস্বীকার করেন রিনার বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাওসার তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করতেন।
গত ২২ জুলাই বিকেলে কাওসার রিনাকে ২ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন। টাকা দিতে না চাইলে রিনাকে বেধড়ক মারধর করে কাওসার ও তার পরিবারের লোকজন। এক পর্যায় কাওসার রিনার পেটে লাথি দিলে তার রক্তক্ষরণ হয়। এতে তার গর্ভের চার মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। রক্তক্ষরণ হওয়ার পরও রিনাকে চিকিৎসা না করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে ওই দিন রাতে পুলিশের সহযোগিতায় রিনাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তার পরিবার। দুদিন চিকিৎসা শেষে রিনার শারীরিক অবস্থান অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরে এ ঘটনায় রিনা বাদী হয়ে আমতলী থানায় স্বামী কাওসারকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের নামে নারী নির্যাতন দমন ও যৌতুকের দাবিতে মারধর, গর্ভের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে কাওসার ও তার সহযোগীরা রিনা ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে হত্যার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হারুন অর রশিদ বলেন, রিনাকে রাতে রক্তক্ষরণ অবস্থায় ভর্তি করা হয়। মারধরে গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। আমতলী থানার ওসি আলাউদ্দিন মিলন বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"