সংসদ প্রতিবেদক

  ১০ আগস্ট, ২০১৮

বরাদ্দ নিয়েও না থাকা এমপিদের ফ্ল্যাট ছাড়ার তাগিদ

বরাদ্দ নিয়েও সংসদ সদস্য ভবনে (ন্যাম ফ্ল্যাট) থাকেন না, এমন এমপিদের ফ্ল্যাট ছেড়ে দিতে তাগিদ দিয়েছে সংসদ কমিটি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের ‘সুন্দর আবাসনের’ জন্য এই তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সংসদ কমিটি বলেছে, ফ্ল্যাটগুলো সংস্কার করে নতুন এমপিদের থাকার ব্যবস্থা করতে এই সুপারিশ করা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের আবাসন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করে যাওয়া সংসদ কমিটি গতকাল বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করে।

সংসদ সদস্য ভবনে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিলেও অনেক সংসদ সদস্য নিজেরা থাকেন না; ওই ফ্ল্যাটে তাদের গাড়িচালক, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের রাখেন। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলার মধ্যে গত বছরের মে মাসে সংসদ কমিটি একজন মন্ত্রীসহ ৩০ জন সংসদ সদস্যকে ‘সংসদ সদস্য ভবনের’ ফ্ল্যাট ছাড়তে চিঠি দিয়েছিল, তবে সাড়া মিলেছিল মাত্র চারজনের। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, এই সংসদের মেয়াদ আর বেশি দিন নেই। পরে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা যাতে সুষ্ঠুভাবে থাকতে পারেন সেজন্য যেসব এমপি সাহেব ফ্ল্যাটে থাকেন না, তাদের ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে, যাতে ফ্ল্যাটগুলোর সংস্কার কাজ এগিয়ে রাখা যায়।এখনো কতজন সংসদ সদস্য ফ্ল্যাট ছাড়েননি- জানতে চাইলে ফিরোজ বলেন, যাদের আমরা একসময় চিঠি দিয়েছিলাম তাদের মধ্যে মোটামুটি ৬০ ভাগ এমপি ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছেন। আর সব মিলিয়ে নিয়মিত থাকেন না এমন এমপি ৩০-৪০ জন হবে। গত বছরের ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এই তোড়জোড় কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে রকম না। অনেকেই আসলে এখানে থাকেন কম। সে জন্যই বলা হয়েছে, যদি প্রয়োজন না হয়, তবে ছেড়ে দিলে আমরা সংস্কার কাজ শুরু করতে পারি। গত বছর সংসদ সদস্যদের বসবাসের জন্য রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ ও নাখালপাড়ায় ১০টি ভবনে ২৯২টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয় সংসদ সচিবালয়। সংসদ কমিটির প্রাথমিক তালিকায় ৯১টি ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্যদের অবস্থান না করার বিষয়টি উঠে আসে। পরে যাচাই-বাছাই করে ৩০ জনের মতো এমপিকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিলের নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যে সংসদ সদস্যরা তাদের বরাদ্দ করা ফ্ল্যাটে থাকেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিলের হুঁশিয়ারি আসে গত বছরের ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক অনুষ্ঠান থেকে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে সংসদ কমিটি। এদিকে, সংসদ ভবন এলাকায় ঢোকার তিনটি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশ রাখার সুপারিশ করেছে সংসদ কমিটি। স্থানগুলো হলো- আসাদ গেট, মানিক মিয়া এভিনিউ গেট এবং মনিপুরীপাড়া গেট।

কমিটির সভাপতি ফিরোজ বলেন, এই তিনটি পয়েন্ট থেকে সংসদে ঢুকতে যাওয়া গাড়িগুলো যাতে রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে না থাকে সে জন্য সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত রাখতে বলা হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সংসদ সদস্যদের কাছে আসা অতিথিদের সঠিকভাবে তল্লাশি করে প্রবেশের অনুমতি প্রদান এবং নির্ধারিত ব্যক্তির সঙ্গে আগত অতিথি দেখা করছেন কি না সে বিষয়টি নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে নিশ্চিত করার ওপর জোর দিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, নূর-ই-আলম চৌধুরী, মাহাবুব আরা বেগম গিনি, পঞ্চানন বিশ্বাস, তালুকদার মো. ইউনুস ও নাজমুল হক প্রধান অংশ নেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close