কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ২৭ জুলাই, ২০১৮

থেমে থেমে বর্ষণ

পাহাড়ধসের আতঙ্কে রোহিঙ্গারা

কক্সবাজারে উখিয়ার ২০টি ক্যাম্পে ৭ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা পরিবার পরিজন নিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকিতে বসবাস করছে। এসব পরিবার ঝুঁকিমুক্ত করতে প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে জবুথবু হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ক্যাম্পের অলি গলি দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় পাহাড় ধসের আতঙ্ক নিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। উখিয়ার ইউএনও বলেছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তেমন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতকাল বৃহস্পতিবারও রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে।

উখিয়ায় আশ্রিত ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে প্রায় ৫ হাজার একর বনভূমি ছোট বড় পাহাড় টিলা কর্তন করে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রশাসন বর্ষা মৌসুমে সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত স্থান থেকে আড়াই লাখ রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিশ্চিত করে। বাকি রোহিঙ্গাদেরকেও একটি সুনির্দিষ্ট নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা যথাযথ সময়ে কার্যক্ষর হয়নি। কালক্ষেপণের ফলে বর্ষা শুরু হয়। এমতাবস্থায় ওইসব ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলো বেকায়দায় পড়ে স্ব-স্ব অবস্থানে দিনযাপন করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বালুখালী ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পের বিভিন্ন অলি গলি দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক স্থানে পাহাড়ে ফাঁটল ধরেছে বলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আয়ুব মাঝি জানান, ক্যাম্পে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে পাহাড় ধসের বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ সময় পাহাড়ের খাদে বসবাসরত মাবিয়া খাতুন জানান, তার আশ্রয় নেওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে পাহাড় ধসের আতঙ্ক নিয়ে রাতযাপন করতে হচ্ছে। পাশেই আরেক মহিলা নছিমা খাতুন জানায়, ভারী বর্ষণে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চলাচলের পথের ওপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। এ মুহূর্তে ঘর ছেড়ে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই এখানেই থাকতে হচ্ছে।

রোহিঙ্গা নেতা আবু তাহের জানান, ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে না। এভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের আহাজারি অভিযোগ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আকুতি শোনা গেছে। রোহিঙ্গা নেতা ডা. জাফর আলম জানান, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে ক্যাম্পে কাদা-পানিতে একাকার হয়ে পড়ার কারণে ও রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় অধিকাংশ রোহিঙ্গা গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, গত ৩ দিনে বালুখালীসহ আশপাশের ক্যাম্পগুলোতে পাহাড় ধসে শতাধিক বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান জানান, তিনি কয়েকটি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।

প্রাকৃতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় এনজিওদের তৎপর থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, ইতোমধ্যে ৩৫ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্য রোহিঙ্গাদেরও ঝুঁকিমুক্ত করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist