নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ জুলাই, ২০১৮

সোনা জমা নেওয়ার পদ্ধতি বদলাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখা সোনা নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলার পর সোনা জমা নেওয়ার পদ্ধতি বদলাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন পদ্ধতিতে জমা রাখা সোনাকে ‘সোনা’ বলা হবে না, বলা হবে ‘সোনার পুঁটলি’ অথবা ‘সোনার প্যাকেট’ অথবা ‘সোনার কৌটা’ অথবা ছোট তালা লাগানো ‘সোনাভর্তি ট্রাংক’। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নতুন পদ্ধতি কার্যকর হলে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টমসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে সোনা রাখতে চাইলে তাদের ‘সোনার পুঁটলি’ অথবা ‘সোনার প্যাকেট’ অথবা ‘সোনার কৌটা’ অথবা ‘সোনাভর্তি ট্রাংক’ হিসেবে রাখতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি অফিসার (মহাব্যবস্থাপক) আওলাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সোনা জমা নেওয়া পদ্ধতি বদলাতে যাচ্ছি। আগের মতো খোলা অবস্থায় কোনো সোনা নেওয়া হবে না। এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে যেকোনো সংস্থা সোনা রাখতে চাইলে, আমরা তাদের সিলগালা করা ‘সোনার পুঁটলি’ অথবা ‘সোনার প্যাকেট’ অথবা ‘সোনার কৌটা’ অথবা ‘সোনাভর্তি ট্রাংক’ রাখব। তিনি বলেন, ‘অচিরেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

জানা গেছে, এতদিন সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে কষ্টিপাথরে সোনার মান যাচাই করে ও পরিমাপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রাখা হতো। এখন থেকে কেবল ‘পুঁটলি’ অথবা ‘প্যাকেট’ অথবা ‘কৌটা’ অথবা ‘ট্রাংক’ রাখবে। ফলে কষ্টিপাথরে সোনার মান যাচাই করাও হবে না। তবে কোনো সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে সোনার পুঁটলি রাখতে চাইলে যথাযথ নিয়ম মানার পাশাপাশি তাদেরও আগের মতোই ডজনখানেক ধাপ অতিক্রম করতে হবে। একইভাবে আদালতের নির্দেশনা মতে, জমা রাখা সোনার পুঁটলি ভল্ট থেকে বের করতে চাইলেও ডজন খানেক ধাপ পার হতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সোনা রাখতে হলে জব্দ সোনার একটি তালিকা তৈরি করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে তালিকা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার গুদামঘর বা নিজস্ব ভল্টে জমা করা হয়। তৃতীয় ধাপে অবৈধ সোনা বাজেয়াপ্ত করার জন্য তালিকা আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালত যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রাখার জন্য বলে, তাহলে চতুর্থ ধাপে সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রাখার অনুমতি চেয়ে আদালতের রায়ের কপিসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় আবেদন করতে হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থার আবেদন আমলে নিয়ে পঞ্চম ধাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনের জন্য একটি ফাইল পাঠায়। সেই ফাইল অনুমোদন হয়ে ফিরে আসার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব সোনা নিয়ে আসার জন্য একটি তারিখ দেওয়া হয়। এরপর ষষ্ঠ ধাপে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি সোনাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়ে আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত স্বর্ণকার নতুন করে সোনার ওজন করেন। এতদিন সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে কষ্টিপাথরে সোনার মান যাচাই করতেন।

সূত্র আরো জানায়, এখন থেকে সোনার মান যাচাই করার দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার। সপ্তম ধাপে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে ‘সোনার ট্রাংক’ অথবা ‘সোনার পুঁটলি’ অথবা ‘সোনার প্যাকেট’ অথবা তালা লাগানো ‘সোনার কৌটা’ বুঝে নেবেন। অষ্টম ধাপে ‘সোনাভর্তি ট্রাংক’ অথবা ‘সোনার পুঁটলি’ অথবা ‘সোনার প্যাকেট’ অথবা তালা লাগানো ‘সোনার কৌটা’কে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর সিলগালা করা হবে। সেই প্যাকেটের ওপর সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি বিভাগের একজন কর্মকর্তা আড়াআড়িভাবে স্বাক্ষর করবেন। নবম ধাপে ‘কৌটা’ বা ‘ট্রাংক’-এর চারদিক দিয়ে ছোট ছোট পিন গেঁথে দেওয়া হবে। সর্বশেষ দশম ধাপে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে ছয় স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পার করে ভল্টের মধ্যে ঢোকানো হবে। পরে ব্যাংক, কাস্টম হাউস অথবা এনবিআর এবং সংশ্লিষ্ট সব দফতরগুলোতে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist