নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ আসামির মৃত্যুদন্ড
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার কাশিপুর এলাকায় ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী আবদুল হালিম উদ্দিন হত্যা মামলার রায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত লাশ গুম করার অভিযোগে প্রত্যেক আসামিকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড দেন।
মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ৩ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এই রায় প্রদান করেন। রায় প্রদানকালে ৭ আসামির মধ্যে ৩ জন উপস্থিত ছিল এবং ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক রয়েছে।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাদেকুর রহমান, মো. ইকবাল হোসেন, সোহাগ এবং বাবু কাজী। বেকসুর খালাস প্রাপ্তরা হলেন- মোক্তার হোসেন, মো. মেহেদী ও আবুল হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লার কাশিপুর দেওয়ানবাড়ী এলাকার হাজী আফসার উদ্দিনের ছেলে ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী হালিম উদ্দিন কয়লা ব্যবসার উদ্দেশে পাঁচ লাখ টাকা দেয় তার বন্ধু একই এলাকার ইকবালকে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ ইকবাল হালিমের টাকা নিজ ব্যবসায় খাটিয়েও কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ায় হালিম কয়েক দফায় তার টাকা ফেরত চায়।
২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট ইকবাল টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে হালিমকে তার বাসায় এসে দেখা করতে বলে। হালিম ওইদিন তার স্ত্রীকে টাকা আনতে যাওয়ার কথা বলে ইকবালের বাড়ির উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এদিকে, হালিম ইকবালের বাড়িতে গেলে পূর্ব থেকেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে ছয়-সাতজন বন্ধুসহ বাসায় অবস্থান নেয় ইকবাল।
হালিম তার বাসায় উপস্থিত হলে ইকবাল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এতে হালিম গুরুতর আহত হলে তাকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ পাঁচ টুকরা করে বস্তায় ভরে একটি ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার এর একদিন পর ১৭ আগস্ট ডোবা থেকে হাত-পা বিহীন বস্তাবন্দি অবস্থায় হালিম উদ্দিনের পাঁচ টুকরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত হালিম উদ্দিনের ছোট ভাই শামীম বাদী হয়ে প্রথমে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে গ্রেফতার হওয়া আসামি সাদেকুর রহমান হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে ইকবালসহ হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
"