চট্টগ্রাম ব্যুরো
টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে জনজীবন বিপর্যস্ত
টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। এতে অন্তহীন দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। এদিকে, জলাবদ্ধতার মধ্যে বিদ্যুৎস্পর্শে এক শিশুসহ দুজন মারা গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে ঈদবাজারগামী মানুষের বিড়ম্বনা এখন চরমে। গত রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে নগরের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে দিনভর নগরীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। গতকাল সকালে পানি নামতে শুরু করলেও খাজা রোড, হালিশহরের কিছু এলাকা, আগ্রাবাদ অ্যাকসেস সড়কের একাংশ, সিডিএ আবাসিক এলাকা এবং বাদুরতলায় সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত পানি জমে থাকতে দেখা যায়। সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামে। আরো দুয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা লঘুচাপটি মৌসুমি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় চট্টগ্রামজুড়ে বিরামহীনভাবে মাঝারি থেকে ভারী এবং টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নিম্নচাপটি গত রোববার ভোররাতে সীতাকুন্ড উপকূল দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করেছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৪৮ ও রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৬০ মিলিলিটার বৃষ্টি হয়েছে। আরো ভারী ও টানা বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে।
এদিকে, নগরের প্রবর্তক মোড়, মুরাদপুর মোড়, মুরাদপুর মোহাম্মদপুর এলাকা, বহদ্দারহাট, চকবাজার, ২নং গেট, হালিশহর, আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, নয়াবাজার, বৌবাজার, কেবি আমান আলী রোডসহ বিভিন্ন এলাকা রোববার মধ্যরাতে পানিতে তলিয়ে যায়। অবিরাম বর্ষণে এসব নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ বাসার নিচতলা পানিতে তলিয়ে যায়। দুর্ভোগ সঙ্গে নিয়েই রাত পার করতে হয়েছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। বক্সির হাট সোনাপট্টি এলাকার কয়েকশ ঘর পানিবন্দি ছিল। তাছাড়া নগরের অন্যান্য এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি জমে যায়। আবার অনেক সড়ক ও উপসড়কেও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। ফলে দুর্ভোগ, ভোগান্তি ও কষ্টময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ঈদের মার্কেটগামী ক্রেতা এবং সাধারণ নাগরিকদের। এর সঙ্গে ছিল অসহনীয় যানজট। বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, রোববার রাত ১২টার পর থেকে পানি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। সোমবার ভোর ৫টার দিকে পানি নামতে শুরু করে। বাসায় পানি ঢুকে পড়ায় সাহরির জন্য খাবার রান্না করা যায়নি। ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন আহমদ বলেন, খালের মাটি অপসারণ করা হচ্ছে।
মাটি তোলার পর তা রাস্তার পাশেও রাখা হচ্ছে না। তবে খালের নদীসংলগ্ন অংশে এখনো মাটি অপসারণ শুরু হয়নি। এ ছাড়া রোববার বেশি বৃষ্টির পাশাপাশি জোয়ারের কারণেও জলাবদ্ধতা হয়েছে।
"