কূটনৈতিক প্রতিবেদক

  ০২ জুন, ২০১৮

ঢাকা-দিল্লির স্বস্তি

সীমান্তে হত্যা শূন্যে আনার উদ্যোগ

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যার ঘটনা এখন অনেকাংশে কমেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী নন লিথাল উইপেন (প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র) ব্যবহার বাড়িয়েছে। বর্তমানে সীমান্তের হত্যা কমে আসায় ঢাকা-দিল্লির মধ্যে স্বস্তি এসেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় আনতে বিজিবি-বিএসএফ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ চলছে। সীমান্তের মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বেড়েছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কও দৃঢ় হয়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার। এটা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তর সীমান্ত। দীর্ঘ এই সীমান্তে চোরাচালানসহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে সীমান্তে গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে আগে প্রায়ই হত্যাকান্ড ঘটত তবে এখন সীমান্তে গরুর চোরাচালান কমে এসেছে। সেই সঙ্গে কমে এসেছে হত্যাও।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলেছে, সীমান্ত হত্যা নিয়ে অতীতে ঢাকা-দিল্লির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সময় নানা প্রশ্নের মুখোমুখি পড়তে হতো। দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় উঠলে অস্বস্তিতে পড়ে যেতেন উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা। দুই দেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই কমে এসেছে সীমান্ত হত্যা। আগামী দিনে সীমান্ত হত্যা একেবারেই শূন্যের কোটায় নেমে আসবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ-ভারতের কর্মকর্তারা।

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, সীমান্তে মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বেড়েছে। এর অভাবে আগে প্রায়ই অনেকে সীমানা অতিক্রম করে অন্য দেশে ঢুকে যেতেন। তবে এখন সহজেই মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে না।

বিএসএফের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিরাজ করছে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও। মূলত এসব কারণেই উভয় দেশই সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর।

চলতি বছরের মার্চের শেষে বাংলাদেশ থেকে একটি সাংবাদিক প্রতিনিধিদল ভারতীয় বিএসএফের আমন্ত্রণে দেশটি সফর করেন। ওই প্রতিনিধিদলকে বিএসএফ কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছে। এই ঐতিহাসিক বন্ধনের জন্যই সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় কড়াকড়ি আরোপ করতে চায় না দেশটি। ‘বিশেষ করে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ভারত যেমন সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে থাকে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া।

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ৪০ জন বাংলাদেশি সীমান্তে হত্যার শিকার হন। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৫ জন। ২০১৬ সালে ৩১ আর ২০১৭ সালে ২১ জন নিহত হন। এই হিসেবে দেখা যায়, সীমান্তে হত্যাকান্ড পুরোপুরি বন্ধ না হলেও অনেকটা কমেছে।

ভবিষ্যতে তা শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে চায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ। যা চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মেলনেও আলোচনা হয়েছে। ওই সময় জানানো হয়, ২০১৮ সালের প্রথম চার মাসে সীমান্তে কোনো হত্যাকান্ড ঘটেনি।

সীমান্ত সম্মেলন শেষে বিএসএফের মহাপরিচালক কে কে শর্মা বলেন, আমরা চাই না সীমন্তে কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হোক। ভবিষ্যতে এ ধরনের হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist