নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রবৃদ্ধিতে চাই সমতার নীতি
এমএম আকাশ
গড়ে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে ধনী-গরীবের বৈষম্যও বাড়ার কথা তুলে ধরে সরকারি নীতি পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক এমএম আকাশ।
তিনি বলেন, মুক্ত বাজার ও চুঁইয়ে পড়া প্রবৃদ্ধির তত্ত্ব থেকে বার হয়ে আসতে হবে এবং সমতাপূর্ণ প্রবৃদ্ধির নীতি গ্রহণ করতে হবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন ও বৈষম্যের চালচিত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আকাশ। বাংলাদেশ জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতি অর্জন করলেও সেটা বৈষম্যকেও বাড়াচ্ছে বলে বিভিন্ন সূচকের মাধ্যমে দেখান তিনি। গিনি সূচক ব্যবহার করে ২০১৩ সালে বিশ্ব ব্যাংক প্রকাশিত বৈষম্য মাত্রার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ৮১ দেশের করা প্রতিবেদনে সারা বিশ্বের গড় হারে বৈষম্য কমলেও বাংলাদেশে সেটা বেড়েছে। ‘২০০৮ সালে সারাবিশ্বে গড় গিনি সূচকে দশমিক ৩৭৯ থেকে ২০১৩ সালে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৩৭১ এ। বিপরীত ক্রমে বাংলাদেশে সেটা দাঁড়িয়েছে দশমিক ৪৬ থেকে দশমিক ৪৮ এ।
বৈষম্যের দিক থেকে বাংলাদেশের পৃথিবীতের ‘প্রথম সারিতেই অবস্থান’ করছে বলে মন্তব্য করেন এমএম আকাশ। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশের ‘ব্যতিক্রমী উন্নয়নের’ পেছনে চারটি চালিকা শক্তি চিহ্নিত করেন তিনি।’
অধ্যাপক আকাশ বলেন, “কিন্তু সেখানে যদি একচেটিয়া শিল্প-ব্যাংক মালিক গড়ে ওঠে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যদি অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী ও অসৎ রাজনীতিবিদের বন্ধন তৈরি হয় এবং রাষ্ট্রযন্ত্র যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাহলে যে বৈষম্য তৈরি হবে, তা হবে চরম বৈষম্য এবং অনৈতিক বৈষম্য। তার ভিত্তির হচ্ছে অনোপার্জিত আয়ের কেন্দ্রীভবন।’
দেশের বৈষম্য কমাতে নারী-পুরুষের উপর বৈষম্য কমানোর উপর জোর দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো নাজনীন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘কর্মোক্ষম নারীদের মাত্র ১৫ শতাংশ বিভিন্ন কাজ করছেন। তার বিপরীতে পুরুষ আছেন ৮২ শতাংশ। এটা বৈষম্যের অনেক বড় প্রমাণ।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ব্যাংকার ও কলামিস্ট রমনীমোহন দেবনাথ বক্তব্য দেন।
"