নিজস্ব প্রতিবেদক
সংসদে সাধারণ আলোচনায় সরকার ও বিরোধীদলীয় সদস্যরা
স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় এলে দেশ আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে
সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ, সাহসী ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে ধাবমান। একমাত্র তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। উন্নয়ন, অগ্রগতি ও আলোকিত এধারা অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনা সরকারের কোনো বিকল্প নেই। তাই দেশবাসীকে আগামী নির্বাচনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। কারণ অগ্নিসন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় এলে দেশ আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা একথা বলেন। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের উন্নয়ন নীতিবিষয়ক কমিটি (সিডিপি) বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের অগ্রযাত্রায় মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই প্রস্তাব আনা হয়। প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সরকার ও বিরোধী দলের সর্বসম্মত কণ্ঠভোটে তা গৃহীত হয়।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর আনা ওই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সরকারি দলের ড. আবদুর রাজ্জাক, আবদুল মতিন খসরু, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান্, অধ্যাপক আলী আশরাফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ড. হাছান মাহমুদ, মৃণাল কান্তি দাস, মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, সানজিদা খানম, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, নাভানা আক্তার, সাবিনা আক্তার তুহিন, বজলুল হক হারুন, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বিএনএফের এস এম আবুল কালাম আজাদ, জাসদের শিরীন আখতার প্রমুখ।
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন, আর তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন। দেশকে উপহার দিয়েছেন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন দূরদর্শী, প্রজ্ঞা ও সাহসী নেতৃত্বর ফসল আজকের এই স্বীকৃতি। প্রধানমন্ত্রীর এই যাত্রাপথ মসৃণ ছিল না, জঙ্গি, অগ্নিসন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে শক্ত হাতে দমন করতে পেরেছিলেন বলেই দেশের এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।’
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দৃশ্যনীয় উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে উন্নয়নের মহাসড়কে স্থাপন করেছেন। বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশে আসেন উন্নয়নের গল্প শুনতে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন একটি উদাহরণ।
ডা. দীপু মনি উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে ফের নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশের অভূতপূর্ব এ অর্জনের পর বসে থাকলে হবে না, আগামী তিন বছর এই উন্নয়নের ধারা আমাদের ধরে রাখতে হবে। তাই অগ্রগতির এধারা অব্যাহত রাখতে হলে একমাত্র পথ হলো শেখ হাসিনার সরকারকে অব্যাহত রাখা।’
তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশের ক্ষমতা ছিল বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে পেরেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই সৎ, সাহসী ও মানবতার নেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। নৌকা ছাড়া আমাদের গতি নেই, বাঙালিরও গতি নেই।’
বিএনএফের এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এবং শেখ হাসিনার মতো একজন কন্যা জন্ম দিয়ে গেছেন। যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু উন্নয়নশীল দেশ নয়, বিশ্বের সামনে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনা শুধু দেশরতœ নন, বিশ্বরতœ প্রমাণিত হয়েছে। তাই বারবার দরকার নৌকা ও শেখ হাসিনার সরকার।’
অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, বাংলাদেশের এ অসামান্য অর্জন সারা পৃথিবীকে চমকে দিয়েছে। শেখ হাসিনার ভিশনারী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়ক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।
আবদুর রহমান বলেন, দেশবাসী ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়ক দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আরেকবার প্রধানমন্ত্রীকে বিজয়ী করুন, অবশ্যই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর কাক্সিক্ষত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবেই।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া-খালেদা জিয়ারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। সেই বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তাই দেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প কেউ নেই। লুটেরা-সন্ত্রাসী-অর্থ পাচারকারী ও এতিমের টাকা আত্মসাৎকারীদের দেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
প্রস্তাবটি উত্থাপন করে রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বল্প সময়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সপরিবারে হত্যার পর দেশের উন্নয়ন থমকে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের বর্তমান ঈর্ষণীয় এ সাফল্যের পেছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, যা বাস্তবায়ন করছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারা অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নন, তিনি এখন বিশ্বনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বাঙালি জাতির জন্য অসামান্য অর্জন।
"