আশুলিয়া প্রতিনিধি
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাদী
সাভারের আশুলিয়ায় সিদ্দিকুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীর জমি দখল করতে না পেরে তাকে উঠিয়ে নিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে থানা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দীর্ঘ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আদালতে মামলা করেন ওই ব্যবসায়ী। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ওই ছাত্রলীগ নেতার ভয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে গত দুই মাস যাবৎ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ব্যবসায়ী ও তার পরিবার। অন্যদিকে, আদালতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের হলেও অদৃশ্য কারণে তা আশুলিয়া থানায় মামলা হিসেবে রুজু হয় দেড় মাস পর ২৫ মার্চ। তবে ততদিনে ওই প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা জামিন নিয়ে উল্টো হুমকি দিয়ে আসছেন ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমানকে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের অভিযোগ, গত কয়েক মাস যাবৎ আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগ সভাপতি শামীম আহম্মেদ সেনওয়ালিয়া এলাকায় তাদের প্রায় নয় শতাংশ জমি দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল। এরই সূত্র ধরে গত ৪ জানুয়ারি দুপুরের দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে উঠিয়ে নেয় শামীম ও তার লোকজন। পরে ঢাকা হাউজিং সোসাইটি ও নফেল প্রজেক্টের ভিতরে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে তার দুই হাত-পা ও চোখ বেঁধে রড, হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে।
এক পর্যায়ে তার দুই পা ভেঙে দেয়। পরে ওই ব্যবসায়ী অচেতন হয়ে পড়লে তাকে মৃত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর তিনি আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছাত্রলীগ নেতা শামীমসহ শহিদুল, এম আর হাবিবুর রহমান (রবিন), ইমরান, রাসেল, সাগর, ডিপজল, লোকমানসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১২ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলা দায়েরের পর আশুলিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি। ফলে ওই ছাত্রলীগ নেতা আরো বেপরোয়া হয়ে ওই ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এখন তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সামাজিকভাবে হেয় করতেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে তিনি এই মামলায় জামিনে রয়েছেন বলেও জানান।
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমি আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় যদি ওই ছাত্রলীগ নেতা দোষী প্রমাণিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক কবির হোসেনের কাছে থানায় মামলা রুজুর বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বলতে পারবেন। তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
"