জাবি প্রতিনিধি
জাবি শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অশিক্ষকসুলভ আচরণের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ‘অশিক্ষকসুলভ’ আচরণের অভিযোগ করেছেন বিভাগটির ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত প্রভাষক সুমাইয়া শিফাত বিভাগটির ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী প্রক্টর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কাছে এক স্মারকলিপিতে সুমাইয়া সিফাতের বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এছাড়া তাকে ৪৩ ব্যাচের সকল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহিত দেওয়াসহ ৬ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, বিভাগের প্রভাষক সুমাইয়া শিফাতের ধারাবাহিক অশিক্ষকসুলভ আচরণে চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক আপনার শরণাপন্ন হয়েছি। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখা, কান ধরে থাকার নির্দেশ দেওয়া, অশোভন শব্দ ব্যবহার, অসহযোগিতামূলক আচরণ, শিক্ষার্থীদের মতকে অগ্রাহ্য করে নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া, ক্লাস না নিয়ে হাজিরা নেওয়াসহ সুমাইয়া শিফাতের বেশ কিছু বিতর্কিত আচরণ চরম অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সুমাইয়া শিফাতের জেএমএস-৪০২ নম্বর কোর্সের পূর্ব নির্ধারিত টিউটরিয়াল পরীক্ষা ছিল। তবে তিন শিক্ষার্থী এক সহপাঠীর মৃত মায়ের জানাজায় অংশ নিতে নারায়ণগঞ্জ গেলে তিনি তাদের পরীক্ষা নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর শ্রেণি প্রতিনিধি মানবিক দিক বিবেচনা করে ওই তিনজনের পরীক্ষা পরে গ্রহণের অনুরোধ জানায়। কিন্তু তিনি পরে পরীক্ষা নিতে অস্বীকৃতি জানান। ওইদিন নির্ধারিত সময়ের পরে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে তিনি অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। পরে বিভাগের সভাপতিসহ অন্য এক শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে পরীক্ষাটি স্থগিত হয়। এর দুই দিন আগে এক শিক্ষার্থী প্রক্ষালন কক্ষ ব্যবহার করতে গিয়ে ক্লাসে ঢুকতে দেরি করায় তিনি তাকে ক্লাসরুম থেকে বের করে দেন। অথচ ওইদিনও তিনি নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে ২০ মিনিট পর ক্লাসে প্রবেশ করেন। ক্লাসে পাঠ গ্রহণের সময় শিক্ষার্থীরা কোনো বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করলে কিংবা ফের আলোচনা করতে বললে তিনি রেগে যান। ক্লাস চলাকালীন কথায় কথায় তিনি শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখেন। অসংখ্যবার তিনি শিক্ষার্থীদের কান ধরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা দলীয় ও ব্যক্তিগতভাবে বিভাগীয় সভাপতিকে অবহিত করলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলোÑ সুমাইয়া শিফাতকে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সকল প্রকার শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া, শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষককে ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার দায়িত্ব হস্তান্তর, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটি, ভাইবা বোর্ড ও উত্তরপত্র মূল্যায়নে সুমাইয়া শিফাতকে অন্তর্ভুক্ত না করা, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো প্রকার ক্ষতির শিকার না হয় সেটি নিশ্চিত করা, উপাচার্য হিসেবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজন করে আস্থার জায়গা নিশ্চিত করা, বিভাগে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা। অভিযোগের বিষয়ে সুমাইয়া শিফাত বলেন, আমি অভিযোগপত্রের বিষয়ে কিছু জানি না। আগে অভিযোগপত্র পড়ি তারপর মন্তব্য করতে পারব।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।
"