নিজস্ব প্রতিবেদক
নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জ্ঞাপন
‘হলি আর্টিজান হামলা ছিল টার্নিং পয়েন্ট’
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনাটি বাংলাদেশের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার পর আমরা অনেকটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তবে খুব দ্রুতই পরিস্থিতি রিকভার করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতিতে যে যার জায়গা থেকে সহযোগিতা করেছে। সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা গেছে। এরপর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।’
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মধ্যে চারজনের স্বজনদের সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্চের সামনে দর্শক সারিতে গিয়ে সেখানে বসা নিহতদের স্বজনদের হাতে স্মারক তুলে দেন।
নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের পক্ষে তার বড় ভাই জারেফ আইয়াজ হোসেন, ইসরাত জাহান আখনের পক্ষে তার বড় ভাই আলী হায়দার আখন, অবিন্তা কবীরের পক্ষে তার মামা তানভীর আহমেদ ও ভারতের নাগরিক তারিশি জৈনের পক্ষে তার চাচা নিরেন সরকার এই সমবেদনা স্মারক গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে পনেরো হাজার ইউরো তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শামসুর রহমান, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান, জাতিসংঘের বিশেষ দূত ডেভিড ডোনাল্ড, জাপানি রাষ্ট্রদূত হিরো ইকো ইজমি প্রমুখ। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ও র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্তত ২৫টি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অনেক জঙ্গি সদস্য নিহত হয়েছেন। অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। সরকারের আহ্বানে অনেক জঙ্গি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। যারা ভুল পথে গিয়েছিলেন তাদের অনেককে পুনর্বাসন করা হয়েছে। অভিযানের সময় জঙ্গি সদস্যরা আত্মাহুতি দিয়ে মারা যাওয়ার পর তাদের মৃতদেহ স্বজনরা পর্যন্ত নিতে আসেনি। তারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘৃণা করেছেন। তিনি বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে আমরা অনেক সফলতা অর্জন করেছি। অনেক জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ, এখানে সব ধর্মের মানুষ এক সঙ্গে একটি মেলবন্ধনে যুক্ত।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি। এ ছাড়া হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন। নিহত তিন বাংলাদেশি হলেনÑ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন, ঢাকার একটি আর্ট গ্যালারির সাবেক প্রধান ইশরাত আখন্দ ও ল্যাভেন্ডারের মালিকের নাতনি অবিন্তা কবীর।
"