তানোর প্রতিনিধি
তানোরে আলুর দাম কম : দিশাহারা চাষি
রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় চাষিরা রীতিমতো দিশাহারা হয়ে পড়েছে। লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচই উঠাতে পারছেন না তারা। জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা আলু রোপণ থেকে উত্তোলন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আর প্রতি বিঘায় আলু উৎপাদন হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ বস্তা (এক বস্তা ৮০ কেজি)। আবার গত মৌসুমে ৯০ থেকে ৯৫ কেজির এক বস্তা আলুর হিমাগার ভাড়া ছিল ৩৬৫ টাকা। কিন্তু চলতি মৌসুমে ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০ টাকা। ফলে হিমাগার ভাড়া পরিশোধ করতেও এবার আলুচাষিদের অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। অথচ এক কেজির আলুর উৎপাদন খরচ প্রায় ৮ টাকা আর বর্তমান আলুর বাজারমূল্য প্রতি কেজি মাত্র ৭ টাকা এতে চাষিদের উৎপাদন খরচ উঠছে না।
তানোরে পাঁচন্দর ইউপির বাসিন্দা প্রসিদ্ধ আলু চাষি লুৎফর রহমান জানান, গত মৌসুমে তিনি ৬০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে কয়েক লাখ টাকা লোকসান গুনেছেন। তিনি বলেন, গত মৌসুমের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার বেশি জমিতে আলু চাষ করেছি কিন্তু আলুর বাজার দিনের দিন যেভাবে দ্রুতগতিতে কমছে তাতে এবারো লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধূরইল হাটে হিমাগার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বৈঠকের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। তানোর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর (সাড়ে সাত বিঘায় এক হেক্টর) জমিতে হয়েছে আলু চাষ। এ বিষয়ে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আলুর ফলন ভালোই হয়েছে তবে বাজারে দাম একটু কম থাকায় আলুচাষিরা বিপাকে পড়েছে।
তিনি বলেন, লাভ-লোকসান নিয়েই ব্যবসা তবে আগামী দিনে আলুর দাম বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী হিমাগার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও রহমান হিমাগারের স্বত্বাধিকারী ফজলুর রহমান জানান, হিমাগারের ভাড়ার বিষয়ে এখনো তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, সারা দেশের হিমাগার অ্যাসোসিয়েশন বসে ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে চাষিরা বলছে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ২৫০ টাকা নির্ধারণ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয় খসড়া সিদ্ধান্ত। ভাড়ার ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত হবে।
"