খুলনা প্রতিনিধি
গণতন্ত্রের জন্য সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিতে হবে : ফখরুল
সংসদ ভেঙে দিয়ে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল শনিবার খুলনায় আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশের অংশ হিসেবে প্রথমটি অনুষ্ঠিত হলো খুলনায়। নগরীর হাদিস পার্কে অনুমতি না পেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই এ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেগে উঠেছে খুলনার মানুষ। খুলনাবাসীকে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা এই খুলনা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করলাম এটা শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য নয়। এর সূচনা হলো বাংলদেশের গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য আমরা আজকে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
দলের স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুধু খুলনা নয়, সারা দেশের মানুষ সরকারের অন্যায় অত্যাচরের জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আওয়ামী লীগকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে বিএনপির সঙ্গে লড়াইয়ে আসারও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তারা।
মঈন খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজকে প্রশাসনকে, পুলিশকে ব্যারাকে রেখে বিএনপিকে মোকাবিলা করুক। আমরা দেখব কে হারে কে জেতে?’
আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশনেত্রী নির্দেশে শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে পরাজিত করব ইনশাল্লাহ।’
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। অতিথি ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সহসভাপতি বরকত উল্লাহ বুলু, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক হুইপ মশিউর রহমান, উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য সৈয়দ মেহেদী রুমি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবর রহমান সরোয়ার, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সোহরাব হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ অরুণ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, অমলেন্দু দাস, কবির মুরাদ ও ড. ফরিদুল ইসলাম।
বক্তব্য দেন খুলনা জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, খুলনা সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, বাগেরহাট জেলা সভাপতি আবদুস সালাম, নড়াইল জেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, চুয়াডাঙ্গা সভাপতি অহেদুল ইসলাম বিশ্বাস, সাতক্ষীরা জেলা সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান, যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবেরুল ইসলাম সাবু প্রমুখ।
এর আগে সকাল থেকে এই জনসভা ঘিরে নগরে উৎকণ্ঠা ছিল। বেলা ১১টার দিকে দেখা যায়, খুলনা সদর থানা মোড়ে ও হেলাতলা মোড়ে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রেখেছে পুলিশ। বিপুলসংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি জলকামান ও পুলিশের সাঁজোয়া যানও ছিল। বিএনপির নেতা-কর্মীরা ধীরে ধীরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এ ছাড়া নগরের প্রবেশ পথ এবং বিভিন্ন মোড়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়ে।
"