কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
লালন স্মরণোৎসব
ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে মহাধুমধাম
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের আখড়াবাড়িতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের লালন স্মরণোৎসব। এ আয়োজনে থাকছে বাউল উৎসব ও গ্রামীণ মেলা। এ উপলক্ষে ছেঁউড়িয়ায় মরা কালীগঙ্গা নদীর তীরের আখড়াবাড়িতে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে উৎসবের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দোল পূর্ণিমার রাতে আনুষ্ঠানিভাবে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মাজারে তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
উৎসবে যোগ দিতে এরই মধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে ছুটে এসেছেন সাধু, গুরু, বাউল ও ভক্তরা। আখড়াবাড়ির আঙিনায় বসার জায়গা হবে না বলে অনুষ্ঠান শুরুর এক সপ্তাহ আগে এসে আসন পেতেছেন লালন ভক্ত ও লালন গবেষক ফকির হƒদয় শাহ।
তিনি বলেন, বছরে দুবার সাঁইজির বারামখানায় সাধু-গুরুদের মিলনমেলা বসে। আয়োজকরা জানান, লালনের অসাম্প্রদায়িক চেতনা আর মানবসেবার আহŸান দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিতেই এই আয়োজন। এ যেন সম্প্রীতির অনন্য এক উদাহরণ। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমায় একতারা, দোতারার তালে গানে গানে মুখর হয়ে ওঠে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি। এ উৎসব নির্বিঘœ করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
ভাববাদী অলৌকিক ধর্মের স্রষ্টা বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই। তার জীবদ্দশায় এমন ফাল্গুনের জোৎস্নালোকের রাত্রিতে বসত দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে সাধুসঙ্গ। এই উৎসবের একটা ভিত্তি হচ্ছে ঠিক এমনি এক দোলের দিনে লালন সাঁইর আবির্ভাব ঘটেছিল ছেঁউড়িয়ার কালী নদীর ঘাটে। সাঁই তার জীবদ্দশায় এই সাধুসঙ্গ করতেন। এই সাধুসঙ্গ পাঁচ ঘর নিয়ে করতেন লালন সাঁই। সাঁইজির নিজের ঘর, দেলবার সাঁই, চৌধুরী সাঁই, পাঞ্জু সাঁই ও মহিম সাঁইজির এক ঘর নিয়ে সাঁইজির সাধু সংঘের ধারা অনুসারে তার ভক্ত ও অনুসারীগণ এই ধারায় প্রতিবছরই দোলপূর্ণিমাতে সাধুসঙ্গ করতেন। সেই ভাববাদি পরম্পরা চলছে এখনও।
"