খুলনা প্রতিনিধি
শাহজালালের চোখ তুলে দেওয়ার মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ
খুলনার যুবক শাহজালালের দুই চোখ তুলে দেওয়ার মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এবার মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশকে। তাদেরকে আগামী ২৫ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার খুলনার মহানগর হাকিম মো. শাহীদুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
তবে আদালতের আদেশে পুরোপুরি খুশি হতে পারেনি শাহজালালের পরিবার। মামলার বাদী ও শাহজালালের মা রেনু বেগম আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পিবিআই ইতোপূর্বে তদন্ত করে পক্ষপাতিত্বমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। সে কারণে তিনি আদালতে নারাজি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পুনঃতদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি যেভাবে আশা করেছিলেন সেভাবে আদেশ হয়নি। ডিবি পুলিশ যদি সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়, তাহলে তিনি বিচার পাবেন, আর তা না হলে আর বিচার পাবেন না।
বাদীর আইনজীবী ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আদালতে জুডিশিয়াল তদন্তের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত ডিবির ডিসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত পুলিশ কি সঠিকভাবে করবে? বাদীর আইনজীবী জানান, খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানা পুলিশ ছিনতাইয়ের অভিযোগে গত বছর ১৮ জুলাই রাতে গোয়ালখালি এলাকা থেকে শাহজালালকে আটক করে। এরপর দাবি করা দেড় লাখ টাকা না দেওয়ায় স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে খুঁচিয়ে শাহজালালের দুই চোখ তুলে দেয় পুলিশ। এমন অভিযোগে গত ৭ সেপ্টেম্বর খালিশপুর থানার তৎকালীন ওসি মো. নাসিম খানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তার মা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন খালিশপুর থানার এস আই রাসেল, এস আই সেলিম মোল্লা, এস আই মিজান, এস আই মামুন, এস আই নুর ইসলাম, এ এস আই তাপস রায়, এ এস আই সৈয়দ সাহেব আলী, আনসারের নায়েক রেজাউল, ল্যান্স নায়েক আবুল হোসেন, সিপাহি আফসার আলী, ৬১/১ পুরাতন যশোর রোডের শুকুর আহম্মেদের মেয়ে সুমা আক্তার ও শিরোমনি বাদামতলা এলাকার লুৎফর হাওলাদারের ছেলে রাসেল।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৫ জানুয়ারি আদালতে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআই উল্লেখ করে যে, কে বা কারা শাহজালালের চোখ তুলে দিয়েছে তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদী আদালতে নারাজি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন করেছিলেন।
"