কলকাতা প্রতিনিধি
দালাই লামাকে হত্যা করতে চেয়েছিল দুই জঙ্গি!
পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরো দুই ‘জঙ্গি’কে গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্কফোর্স (এসটিএফ) এই দুই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং দার্জিলিং থেকে। গ্রেফতার হওয়া দুজন হলেন শেখ জামিরুল ও শেখ পয়গম্বর।
পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেফতার দুজন বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলা শহরের অদূরে খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার হাতকাটা নাসিরুল্লাহসহ বাকি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জঙ্গি কার্যকলাপের প্রশিক্ষক ছিলেন শেখ পয়গম্বর। আর জামিরুল ছিলেন সহকারী। মুর্শিদাবাদের কাঁকুড়িয়ায় ‘আল তৌহিদ একাডেমি’ নামের একটি স্কুলে আরবি ভাষা শেখাতেন পয়গম্বর। এছাড়া তিনি কলোনি মসজিদের ইমাম ছিলেন। পাশাপাশি আতরের ব্যবসাও করতেন। আর জামিরুল মূলত কসাইদের কাঁঠালপাতা সরবরাহ ও মালপত্র পরিবহনে যানবাহনের ব্যবস্থা করতেন। গত বুধবার রাতে এসটিএফের নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং ও শিলিগুড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ওই দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতার বিশেষ নগর ও দায়রা আদালতে তাদের হাজির করা হয়। পরে আদালত তাদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দেন।
এসটিএফ জানিয়েছে, দুই জঙ্গিকে জেরা করে জানা গেছে, তিব্বতের ধর্মগুরু দালাই লামাকে বুদ্ধগয়ায় হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে তারা এই পরিকল্পনা করেন। পুলিশ এখন তদন্ত করে দেখছে, এর পেছনে আর কারা কারা জড়িত। সে লক্ষ্যে কলকাতার পুলিশ বিহার পুলিশের সঙ্গেও তথ্য আদান-প্রদান করছে। তবে দালাই লামাকে হত্যার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। দালাই লামা ঘুরে যাওয়ার পর গত ১৯ জানুয়ারি বুদ্ধগয়া থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করে পুলিশ। এসটিএফ গ্রেফতার দুজনের কাছ থেকে ল্যাপটপ, ট্যাব, গ্লাভস, যন্ত্রপাতিসহ ৫০ কেজি অ্যামোনিয়া নাইট্রেট উদ্ধার করেছে। ২০১৪ সালে খাগড়াগড়ের একটি ভাড়া বাড়িতে আস্তানা গেড়েছিল জেএমবির জঙ্গিরা। বাড়িতেই বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে ওই বছরের ২ অক্টোবর নিহত হন জেএমবির সদস্য শাকিল আহমেদ। গুরুতর আহত হন সোবহান ম-ল ও আবদুল হাকিম। পরে মারা যান আবদুল হাকিম। ওই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল দুই নারীকেও।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএ)। খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় বিচার চলছে কলকাতার বিশেষ নগর দায়রা আদালতে। ইতোমধ্যে এই মামলায় এনআইএ ২৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে। ৪৬০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে।
"