তহিদুল ইসলাম, জাবি

  ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮

জাবিতে জমজমাট শীতের পিঠা-পুলির বাজার

পিঠা পছন্দ করেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দায়। জিভে পানি আসা উপাদেয় খাবার হিসেবে পিঠা সব সময় বাঙালির পছন্দের পয়লা তালিকায় থাকে। অগ্রহায়ণ-পৌষে নতুন ধান ওঠে, ঘরে ঘরে শুরু হয় নবান্ন, আর নবান্নের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো পিঠা। পৌষ চিরকালই সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে এসেছে চিরায়ত বাংলায়। এ কারণে শীতকালের সঙ্গে পিঠার একটি আলাদা সম্পর্ক। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা ধরনের পিঠার স্বাদ নেওয়া তরুণ-তরুণীরা পড়তে আসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কিন্তু শীত এলেও ক্যাম্পাসে মায়ের হাতে পিঠা খাওয়ার সুযোগ নেই, তবে ক্যাম্পাসের নানা জায়গায় বসে পিঠার দোকান। সেখানে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো শিক্ষার্থীরা যান পিঠা খেতে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও শীতের আগমন ঘটেছে বেশ আগেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারসংলগ্ন স্থান, অমর একুশে, ছবি চত্ব¡র, লাইব্রেরির সামনে, বটতলা, প্রীতিলতা হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল ও শেখ হাসিনা হলসংলগ্ন স্থানে পিঠা বিক্রির অস্থায়ী দোকান রয়েছে। পুরোদমে শীত থাকায় জমেও উঠেছে এখানকার পিঠার দোকানগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতের পিঠার মূল বাজারটি বসে মেডিক্যাল সেন্টারসংলগ্ন স্থানে। এখানে প্রায় ডজনখানেক পিঠার দোকান রয়েছে। এসব দোকানে ভাঁপা, চিতই, পাটিসাপটা, নকশি, তেলের পিঠা প্রভৃতি শীতের পিঠার পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে মাশরুম, সবজি, মাংশ প্রভৃতি পিঠা। গ্রামে শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে পিঠা খাওয়ার দৃশ্য পরিচিত। তবে এখানে বিকেল থেকে এসব দোকানে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে। আর সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় ক্রেতাদের ভিড়। এসব দোকানে ক্রেতাদের মধ্যে যেমন শিক্ষার্থীরা রয়েছেন, তেমনি আছেন বহিরাগতরাও। দূর-দূরান্তের অনেকেই এখানকার পিঠার স্বাদ নেন। দোকানিরা ক্রেতাদের কাছে পিঠা পিস হিসেবে বিক্রি করেন। শিক্ষার্থীদের কাছে স্থানটি এখন ‘পিঠা চত্ব¡র’ নামেই বেশি পরিচিত। বাড়ি ছেড়ে আসা শিক্ষার্থীরা পিঠার স্বাদ নিতে সন্ধ্যা হলেই জমায়েত হন মেডিক্যাল সেন্টারসংলগ্ন এই পিঠার বাজারে। রায়হান গাজী নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেকেই পড়াশোনার ব্যস্ততাসহ নানা কারণে বাড়ি যেতে পারে না। ফলে তারা বাড়ির শীতের পিঠার স্বাদ নিতে পারে না। তবে ক্যাম্পাসে পিঠার দোকান থাকায় শিক্ষার্থীরা পিঠা খাওয়ার সুযোগ পায়।’

সরেজমিন এক সন্ধ্যায় পিঠা চত্ব¡রে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বিক্রেতাদের কেউ কেউ ব্যস্ত পিঠা বিক্রিতে, কেউবা পিঠা তৈরিতে। কথা হয় জোসনারা খাতুন নামে এক দোকানির সঙ্গে। তিনি জানান, পিঠা বিক্রি বেশ ভালোই হয়। তবে মাঝে মাঝে তাকে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। তবে মেডিক্যালের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশে এমন পিঠার বাজার হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষার্থীদের একাংশের। বিশেষ করে এতে আলবেরুনী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ এসব পিঠার দোকান উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে, আবার নিয়ন্ত্রিতভাবে অন্য কোনো উপযুক্ত স্থানে পিঠার দোকান রাখার পক্ষে অনেকে। বিরক্ত মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। তাদের অভিযোগ-পিঠার বাজারে আসা বহিরাগতদের চাপে মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist