কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ০৬ জানুয়ারি, ২০১৮

কক্সবাজারে পাহাড় কাটার স্পটে

পরিবেশ অধিদফতরের অভিযান তদন্ত, বিট কর্মকর্তা ক্লোজড

কক্সবাজার সংরক্ষিত বনে একাধিক মিনি পিকআপ (ডাম্পার) লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির সেই স্পটে অবশেষে অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। সেই স্পটে ঘটনা তদন্তে যান কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেন। অপরদিকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে স্থানীয় বন বিট কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. জগলুল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বন ও পাহাড় ধ্বংসে যারা জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি বন ও পাহাড় রক্ষার দায়িত্বে অবহেলা করলে বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই ওই এলাকার বিট কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে।’

এদিকে গতকাল শুক্রবার প্রতিদিনের সংবাদে ‘সংরক্ষিত বনে থামছে না পাহাড়খেকোর দৌরাত্ম্য’ শিরোনামে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এখনো পাহাড় কাটার ঘটনার তদন্ত চলছে। এ ছাড়া পাহাড় কাটার ঘটনায় ইতোপূর্বে তিনটি মামলা দেওয়া হয়েছে।’

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সাইফুল আশ্রাব প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছি। সেখানে ভয়াবহ আকারে পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে অভিযানের খবর পেয়ে জড়িতরা আগেই পালিয়ে গেছে। আমরা সেখানে গোপনে ও প্রকাশ্যে তদন্ত করে পাহাড় কাটায় জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের ফুলছড়ি বন বিটের আওতায় থাকা পূর্ব নয়াপাড়া এলাকায় সংরক্ষিত বনে পাহাড় কাটা চলছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে। ওই এলাকার মৃত ছাবের আহমদের ছেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গিয়াস উদ্দিন, তার ভাই জসিম উদ্দিন, নুরুচ্ছফার ছেলে আইয়ুব আলী প্রকাশ আয়া, মৃত মোজাহের আহমদের ছেলে আবদুচ ছালাম, মৃত ইসহাকের ছেলে ছৈয়দ আলমসহ ৭-৮ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র একাধিক ডাম্পার দিয়ে পাহাড়ের মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয় ভাবে বন কর্মকর্তারা নেপথ্যে পাহাড় কাটায় সহায়তা করেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। যার কারণে বছরের পর বছর ধরে পাহাড় কাটা হলেও এসব বন্ধ হচ্ছে না। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খুটাখালি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমার পরিবারের সব ভাইয়েরই একটি করে ডাম্পার গাড়ি রয়েছে। আমরা মূলত ছরা থেকে বালি তুলে বিক্রি করি। আর যে পাহাড়ে মাটি কাটার কথা বলা হচ্ছে, সেখান থেকে মাঝে মধ্যে কয়েক গাড়ি মাটি নিয়েছি। এসব ধসে পড়া মাটি।’ তিনি নির্দোষ দাবি করে আরো বলেন, ‘পাহাড় থেকে ধসে পড়া এসব মাটি বন বিভাগের লোকজনকে কিছু খরচাপাতি দিয়েই আমরা নিয়েছি। আমরা পাহাড় কাটায় জড়িত নই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist