পুষ্পিতা তাবাসসুম
বিয়ের শাড়ি
নারীদের প্রিয় ভূষণ হচ্ছে শাড়ি। আর সেটা যদি হয় বিয়ের মতো কোনো উৎসব, তাহলে তো কথাই নেই। যার যার সামর্থ্যমতো সেই শাড়ি কেনার চেষ্টা চলে। কারণ শাড়ির সঙ্গে বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্য ও আবেগ জড়িয়ে আছে। যদিও হাল আমলে শাড়ির বদলে থ্রিপিস কিংবা ম্যাক্সিও একটি বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। তার পরও বিয়ের কনেকে শাড়িতে সবচেয়ে বেশি মানায়।
যেকোনো উৎসব কিংবা পাবণে বাঙালি নারীদের প্রিয় ভূষণ হচ্ছে শাড়ি। আর সেটা যদি হয় বিয়ের মতো কোনো উৎসব, তাহলে তো কথাই নেই। যার যার সামর্থ্যমতো সেই শাড়ি কেনার চেষ্টা চলে। কারণ শাড়ির সঙ্গে বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্য ও আবেগ জড়িয়ে আছে। যদিও হাল আমলে শাড়ির বদলে থ্রিপিস কিংবা ম্যাক্সিও একটি বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। তার পরও বিয়ের কনেকে শাড়িতে সবচেয়ে বেশি মানায়, আর দেখতেও সবাই পছন্দ করেন। বাহারি রং আর কারুকাজের শাড়ি বিয়েতে অন্যরকম মাধুর্য নিয়ে আসে। আগের দিনে বউয়ের শাড়ি মানেই ছিল লাল টুকটুকে বেনারসি কিংবা কাতান। মাঝে অনেকেই বিদেশি শাড়ির দিকে ঝুঁকেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় শাড়ি আবার ফিরে আসছে স্বমহিমায়। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস বাজারে এনেছে শাড়ির বিশাল সম্ভার। যেহেতু বিশেষ উৎসবকে মাথায় রেখে এগুলো করা হয়েছে, তাই ডিজাইনেও এসেছে ভিন্নতা। এখন বিভিন্ন ধরনের নকশা ও শাশ্বত সৌন্দর্য ফুটে উঠছে শাড়িতে।
বিয়ের মূল উৎসব শুরু হয় পানচিনি থেকে। তারপর গায়ে হলুদ, বিয়ে, বৌভাতে শাড়ির রং বা ধরন হয় ভিন্ন ভিন্ন। যেমন : আগে পানচিনি ঘরোয়াভাবে হলেও এখন বেশ ঘটা করে হয়। তবে পানচিনিতে হালকা কাজের শাড়ি বেছে নেন অনেকে। ম্যাটেরিয়াল হতে পারে মসলিন, শিফন, সফট সিল্ক, ক্রেপ জর্জেট। রং হতে পারে নীল, গোলাপি, পিচ, লাইট পার্পল ইত্যাদি।
বিয়ের অন্যতম আকর্ষণ গায়ে হলুদ। গায়ে হলুদে সুতি শাড়িই সবচেয়ে মানানসই। সুতির পাশাপাশি এখন চলছে টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক বা সফট সিল্ক। আর জামদানি তো আছেই। জামদানি বা সুতি শাড়িতে নিজের পছন্দমতো পাড় লাগিয়ে নিতে পারেন। চিরায়ত লাল পাড়ের হলুদ শাড়ির পাশাপাশি কমলা, গাঢ় সবুজ, কাঁচা মেহেদি, হালকা বেগুনি চলছে এখন।
বিয়ে বললেই যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে লাল রং। বিয়েতে তাই বেছে নিন লাল শাড়ি। একেবারেই লাল পরতে না চাইলে আছে মেরুন, জাম, গাঢ় নীল, বেগুনি বা গোলাপি। বিয়ের দিন বেছে নিন সবচেয়ে জমকালো শাড়িটি। ম্যাটেরিয়াল হতে পারে বেনারসি, কাতান, টিস্যু বা মসলিন। পিটানো জরির মিনা করা, সিকোয়েন্সের ভারী কাজ, এমব্রয়ডারি, মুক্তা বা কুন্দনের কাজ করা শাড়ি বেছে নিতে পারেন।
বৌভাতে বেছে নিন ফ্যাশনেবল, ট্রেন্ডি হালকা কাজ ও রঙের শাড়ি। রং হতে পারে গোল্ডেন, পেঁয়াজ, সফট পিংক, পিচ এমকি সাদা। অনেকেই সাদা পরছেন এখন বৌভাতে এমকি বিয়েতেও। বৌভাতে ভালো লাগবে সিফন, মসলিন আর হালকা কাজের জামদানি। সঙ্গে বেছে নিন কন্ট্রাস্ট ওড়না। সাদার শুভ্রতা আপনাকে অনন্য করে তুলবে।
তবে মনে রাখবেন, আপনার গায়ের গড়ন ও ধরন বুঝে শাড়ি পছন্দ করবেন। আপনার গায়ের রং শ্যামলা বা কালো হলে একটু গাঢ় রঙের শাড়ি বেছে নিন। যেমন ব্লাড রেড, গাঢ় নীল বা গোলাপি। পেঁয়াজ বা বেগুনি রঙের শাড়ি মানিয়ে যাবে সবাইকে।
যদি উচ্চতা কম হয়, তাহলে বেছে নিন সরু পাড় বা পাড় ছাড়া শাড়ি। উচ্চতা ভালো হলে চওড়া পাড়ের শাড়ি পরুন। আপনার গড়ন হালকা শুকনো হলে ভারী শাড়ি বেছে নিন। শাড়িটি হতে পারে টিস্যু বা মসলিনের আর ভারী কাজের। ভারী গড়নের হলে বেছে নিন সফট ম্যাটেরিয়ালের গাঢ় রঙের শাড়ি। যেমন শিফন বা জর্জেট।
কোথায় পাবেন : মিরপুর অরিজিলান ১০-এর বেনারসি পল্লীতে আছে অসংখ্য শাড়ির দোকান। এখানে দেশি-বিদেশি নানারকমের ও বাজেটের শাড়ি পাবেন। এ ছাড়াও মনে রেখো, প্রিয়, জ্যোতি, কুমুদিনি বিয়ের শাড়ির জন্য বিখ্যাত। বেইলি রোডের নাটক পাড়া তো আছেই। এ ছাড়াও বুটিক শপগুলোর মধ্যে আড়ং, বিবিয়ানা, ড্রেসিডেল, মায়াসির দেশীয় কাতান জামদানি শাড়ির জন্য বিখ্যাত। ইন্ডিয়ান জমকালো শাড়ি চাইলে আর বাজেট ভালো হলে চলে যান জারা, নাবিলা বা ভাসাবিতে। বাজেট কম? ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে পাবেন কম দামে ভালো মানের শাড়ি। দোকানের কোনো শাড়ি পছন্দ না হলে বা বিয়েতে একেবারেই স্বতন্ত্র শাড়িটি চাইলে অর্ডার দিয়ে শাড়ি তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। তবে ডিজাইনভেদে সময় লাগবে এক-তিন মাস আর খরচ পড়বে ১৫ হাজার-৫০ হাজার টাকা। বেনারসি পল্লীর অনেক দোকানেই শাড়ির অর্ডার নিয়ে থাকে। ফ্যাশন হাউস আড়ং, মায়াসির, ডিজাইনার এমদাদ হকও শাড়ির অর্ডার নিয়ে থাকেন। কিন্তু দরদাম করে কিনতে অবশ্যই ভুলবেন না।
"